প্রথম মহীপালের শাসন সম্পর্কে সারনাথ লিপির গুরুত্ব আলোচনা কর
প্রথম মহীপালের শাসন সম্পর্কে সারনাথ লিপির গুরুত্ব আলোচনা কর |
প্রথম মহীপালের শাসন সম্পর্কে সারনাথ লিপির গুরুত্ব আলোচনা কর
- অথবা, বাংলার ইতিহাসে সারনাথ লিপি গুরুত্বপূর্ণ কেন?
- অথবা, বাংলার ইতিহাসের উৎস হিসেবে সারনাথ লিপি গুরুত্ব সংক্ষেপে লিখ ।
উত্তর : ভূমিকা : দশম শতাব্দীর শেষভাগে যখন পাল রাজবংশ চরমভাবে বিপর্যস্ত ও দুর্দশাগ্রস্ত এবং অবনতির রেমসীমায় উপনীত হয়েছিল তখন দ্বিতীয় বিগ্রহপালের পুত্র প্রথম মহীপালপাল সিংহাসনে বসেন।
তার নামে উৎকীর্ণ বিভিন্ন লিপি থেকে তার রাজত্বকাল সম্পর্কে জানা যায়। তার আমলের আবিষ্কৃত লিপিগুলোর মধ্যে সারনাথ লিপি অন্যতম ।
→ সারনাথ লিপির গুরুত্ব : সারনাথর লিপি গুরুত্ব সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. প্রথম মহীপালের রাজত্বকাল সম্পর্কে জানার অন্যতম মাধ্যম : প্রাচীনকালের ইতিহাস রচনা করতে হলে ঐতিহাসিকদের সমসাময়িক নথি-পত্র থেকে তথ্য নিয়ে লিখতে হয়। আর ইতিহাস রচনার উৎস খুবই অপ্রতুল।
সেদিক থেকে বিবেচনা করলে সারনাথ লিপির গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা সারনাথ লিপির মাধ্যমে প্রথম মহীপালের রাজত্বকাল সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় ৷
২. রাজ্য বিস্তার সম্পর্কে ধারণা : সারনাথ লিপি প্রথম মহীপালের রাজ্য বিস্তার সম্পর্কে ধারণা দেয়। বারানসিতে আবিষ্কৃত এ লিপি থেকে ঐতিহাসিকরা অনুমান করেন যে ১০২৬ খ্রিষ্টাব্দে মহীপালের অধিকার বারানসি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল।
৩. মন্দির নির্মাণ ও সংস্কার সম্পর্কে ধারণা : সারনাথ লিপি থেকে জানা যায় যে, গৌড়াধিপতি মহীপালের আদেশে তার অনুজ শ্রীমান স্থিরপাল ও বসন্তপাল কর্তৃক নতুন নতুন মন্দির নির্মাণ ও পুরাতন মন্দিরাদির সংস্কার সাধিত হয়।
এ থেকে বুঝা যায় যে, পাল রাজশক্তির পুনঃঅভ্যুদয়ের চিহ্নস্বরূপ মহীপাল প্রাচীন কীর্তির রক্ষণে যত্নশীল ছিলেন।
৪. ধর্মীয় গুরুর পাদ আরাধনা : সারনাথ লিপি হতে জানা যায় যে, মহীপাল এ বৌদ্ধতীর্থে, কাশি জনৈক গুরু-রামরাশীর পাদ আরাধনা করেছিলেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রথম মহীপালের রাজত্বকাল এবং তার রাজত্বকালে জনহিতকর কার্যাবলির সঠিক তথ্য পাওয়া যায় সারনাথ লিপির মাধ্যমে। তাই প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে সারনাথ লিপির গুরুত্ব অপরিসীম ।