প্রথম মহীপালের ইতিহাস জানার উৎস ও জনহিতকর কার্যাবলি লিখ
প্রথম মহীপালের ইতিহাস জানার উৎস ও জনহিতকর কার্যাবলি লিখ |
প্রথম মহীপালের ইতিহাস জানার উৎস ও জনহিতকর কার্যাবলি লিখ
- অথবা, প্রথম মহীপালের ইতিহাস জানার উৎস ও জনহিতকর কার্যাবলি উল্লেখ কর।
উত্তর : ভূমিকা : পাল রাজাদের মধ্যে প্রথমে মহীপাল এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তবে বলিষ্ঠ নেতৃত্বে পতোন্মুখ পাল সাম্রাজ্য পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠে।
তার সিংহাসন আরোহণকালে পাল সাম্রাজ্য শুধু অঙ্গ ও মগধে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তিনি অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে পাল সাম্রাজ্যের গৌরব ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।
বিভিন্ন উৎস যেমন— দেব দেবীর মূর্তি, সারনাথ ও তিরুমুলাই লিপি, তাম্রশাসন প্রভৃতি থেকে এ মহান শাসকের কার্যাবলির সম্পর্কে জানা যায়।
→ প্রথম মহীপালের ইতিহাস জানার উৎস : কুমিল্লা জেলার বাঘাউড়া ও নারায়ণপুর গ্রামে প্রাপ্ত একটি বিষ্ণু ও একটি গণেশ মূর্তির পাদপীঠ যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ সাং বছরে উৎকীর্ণ মহীপালের দুটি লিপি পাওয়া যায়, যা থেকে তার ইতিহাস জানা যায়।
বারানসির নিকটবর্তী প্রাচীন বৌদ্ধতীর্থ সারনাথে প্রাপ্ত মহীপালের রাজত্বকালের ১০৮৩ সনে (১০২৬ খ্রি.) উৎকীর্ণ লিপি।
এবং তিরুমুলাই লিপি প্রথম মহীপালের ইতিহাস জানার গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এছাড়া বেলাব তাম্রশাসন ও বানগড় লিপি থেকে প্রথম মহীপালের ইতিহাস জানা যায়।
→ প্রথম মহীপালের জনহিতকর কার্যাবলি : প্রথম মহীপাল জনতিহকর কার্যাবলির মাধ্যমে জনপ্রিয় ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত লাভ করেন। তিনি অনেক দিঘি ও নগর নির্মাণ করেন।
অসংখ্য লোক গাথায় মহীপালের নাম জড়িত ছিল। বৃন্দাবন দাসের চৈতন্য ভগবতে বলা হয়েছে যে, ষোল শতকের প্রথমার্ধে মহীপালের এসব গীতিকা খুব জনপ্রিয় ছিল।
রংপুর জেলার মাহীগঞ্জ, বগুড়া জেলার মহীপুর, দিনাজপুর জেলার মাহীসন্তোষ, মহীপাল দিঘি ও মুর্শিদাবাদ জেলার মহীপাল নগরী, সাগরদিঘি প্রথম মহীপালের স্মৃতিবহ এবং এগুলো প্রমাণ করে যে, বাংলার জনগণের নিকট তিনি কতখানি জনপ্রিয় ছিলেন। সম্ভবত জনহিতকর কার্যাবলির মাধ্যমেই প্রথম মহীপাল এই জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রথম মহীপাল তার দীর্ঘ রাজত্বকালে সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার এবং ধর্মীয় ও জনহিতকর কার্যাবলি দ্বারা প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে একজন সুশাসক হিসেবে নিজের স্থান করে নেন।
তিনি যে একজন ন্যায়পরায়ণ, ধর্মহিতৈষী ও প্রজারঞ্জক শাসক ছিলেন তা বিভিন্ন প্রাচীন উৎস থেকে জানা যায় ।