পঞ্চরত্ন বলতে কী বুঝ । পঞ্চরত্ন কাদের বলা হয়
পঞ্চরত্ন বলতে কী বুঝ । পঞ্চরত্ন কাদের বলা হয় |
পঞ্চরত্ন বলতে কী বুঝ । পঞ্চরত্ন কাদের বলা হয়
- অথবা, পঞ্চরত্ন কারা এ সম্পর্কে কি জান?
উত্তর : ভূমিকা : সেন বংশের অন্যতম একজন রাজা হলেন। লক্ষ্মণ সেন। পিতার মৃত্যুর পর তিনি পরিণত বয়স প্রায় ৬০ বছর বয়সে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন।
সিংহাসনে আরোহণ করে তিনি পিতৃরাজ্যকে রক্ষা এবং এর সাম্রাজ্যে সীমা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তার করেছিলেন।
তাঁর শাসনামলে বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতির ব্যাপক উৎকর্ষ সাধিত হয়। তার রাজ সভা অলংকৃত করেছিল বহু জ্ঞানীগুণী ও পণ্ডিত বর্গ।
নিম্নে প্রশ্নালোকে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
→ পঞ্চরত্ন : লক্ষ্মণ সেনের রাজত্বকালে সংস্কৃত সাহিত্যের ব্যাপক উৎকর্ষতা লাভ করেছি আর এর পিছনে অবদান রেখেছিল।
তার সময়কার বিখ্যাত কয়েকজন কবি যারা ছিল লক্ষ্মণ সেনের রাজদরবারের রত্ন। তাদের মধ্যে পাঁচজন সভাকবি ছিল বিশেষভাবে সমাদৃত। তাদেরকে একত্রে পঞ্চরত্ন বলে অভিহিত করা হয়।
নিম্নে এ পাঁচজন কবির নামসহ তাদের রচিত গ্রন্থসমূহ উল্লেখ করা হলো :
১. জয়দেব : জয়দেব ছিলেন লক্ষ্মণ সেনের সভাকবিদের মধ্যে অন্যতম। তার রচিত গীতগোবিন্দ সংস্কৃত সাহিত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন ।
২. উমাপতিধর : লক্ষ্মণ সেনের রাজদরবারকে অলংকৃত করা কবিদের মধ্যে অন্যতম আরও একজন কবি হলেন উমাপতিধর। তার রচিত দেওপাড়া প্রশস্তি সেন শাসনের পরিচয় বহন করে । তিনি বহু সংস্কৃত সাহিত্যের রচনা করেন।
৩. গোবর্ধন : লক্ষ্মণ সেনের পঞ্চরত্নের মধ্যে গোবর্ধন ছিল বিশিষ্ট একজন কবি। তাঁর রচিত 'আর্যসপ্তদশী' সুবিখ্যাত একটি গ্রন্থ।
৪. ধোয়ী : লক্ষ্মণ সেনের রাজ সভা 'অলংকৃত করা কবিদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন ধোয়ী। তাঁর রচিত 'পবনদূত' কাব্যখানি এক অমূল্য সাহিত্য সম্পদ।
৫. শরণ : কবি শরণ ছিলেন এমন একজন বিখ্যাত সুপণ্ডিত যিনি দুরূহ রচনায় অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। আর এ কারণেই তিনি অন্যান্য কবিদের তুলনায় বেশি সমাদৃত।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পাল শাসন আমল ছিল সংস্কৃতি সাহিত্যের এক স্বর্ণযুগ। এর প্রমাণ বহন করে লক্ষ্মণ - সেনের রাজত্বকালে তার রাজদরবার অলংকৃত করা কবি, সাহিত্যিক, জ্ঞানী-গুণী পণ্ডিতদের রচনার মাধ্যমে।
এসব কবিদের মধ্যে কয়েকজন ছিল বিশেষভাবে পরিচিত, যাদের প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে পঞ্চরত্ন বলা হয়।