ঐন্দ্রি মহাশক্তি কী । ঐন্দ্রি মহাশক্তি বলতে কী বুঝ
ঐন্দ্রি মহাশক্তি কী । ঐন্দ্রি মহাশক্তি বলতে কী বুঝ |
ঐন্দ্রি মহাশক্তি কী । ঐন্দ্রি মহাশক্তি বলতে কী বুঝ
- অথবা, ঐন্দ্রি মহাশক্তি সম্পর্কে লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : লক্ষ্মণ সেন তার পিতার মৃত্যুর পর পরিণত বয়সে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। রাজত্বের প্রথম দিকে তার যথেষ্ট শৌর্যবীর্য ছিল।
এ কারণে তিনি বহু রাজ্য জয় করে নিজ রাজ্য সীমা বৃদ্ধি করেছিলেন। কিন্তু তার রাজত্বের শেষদিকে তাঁর দুর্বলতা হেতু মুসলিম শক্তির কাছে তাকে মাথা নত করতে হয়েছিল ।
→ ঐন্দ্রি মহাশক্তি : অনেক বেশি বয়সে লক্ষ্মণ সেন বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করার ফলে প্রথম দিকে তিনি তার রাজ্য শাসনে বেশ মনোযোগী ছিলেন এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে তিনি এগুলো থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে ধর্ম কর্ম - ও জ্যোতিষচর্চা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
ফলে তিনি নিজের আত্মরক্ষার জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমণ সম্পর্কে তিনি জ্যোতিষদের কাছে জানতে চান।
জ্যোতিষরা তাকে বখতিয়ার খলজির আক্রমণের হাত থেকে বাঁচার জন্য দেশ ছেড়ে পলায়নের পরামর্শ দেন।জ্যোতিষরা বলে তুর্কিরা তাকে আক্রমণ করবে এবং বিজিত হবে।
জ্যোতিষরা এটাও বলেছিল যে, যার দুই বাহু এত বড় হবে যে, যা সেই ব্যক্তির হাঁটু পর্যন্ত ঝুলে থাকবে। সে ব্যক্তিই বাংলা জয় করবে।
জ্যোতিষদের পরামর্শ মতো লক্ষ্মণ সেন খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে এ ব্যক্তিই হলো বখতিয়ার খলজি। এতে তিনি মনোবল হারিয়ে ফেলেন।
তিনি এ থেকে বাঁচার জন্য উপায় খুঁজতে থাকেন। এ কারণে তিনি 'ঐন্দ্রিক' নামক যজ্ঞ করে নিজের ভাগ্য ফেরানোর চেষ্টা করেন। তিনি যুদ্ধের কোনো প্রস্তুতি না নিয়ে অদৃষ্টবাদকে আশ্রয় করে বাঁচার জন্য চেষ্টা করেন।
তারপরও তিনি কোনো লাভ করতে পারেননি। বখতিয়ার খলজি তার রাজ্য আক্রমণ করে নদীয়ায় তথা মুসলমান শাসনের সূত্রপাত করেন ৷
প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে লক্ষ্মণ সেন বখতিয়ার খলজির হাত থেকে বাঁচার জন্য যে ধর্ম যজ্ঞ করেছিল তাই ‘ঐন্দ্ৰিক’ মহাশক্তি’ নামে পরিচিত ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, লক্ষ্মণ সেন শেষ বয়সে এসে দুর্বল হয়ে পড়েন এবং ভাগ্যের উপর সবকিছু ছেড়ে দিয়ে ধর্মের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন।
তাই তিনি বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমণের কথা জেনেও প্রতিরোধমূলক কোনো কর্মসূচি গ্রহণ না করে অদৃষ্টবাদকে আশ্রয় করেন। যার ফলে বাংলা থেকে সেন শাসনের অবসান ঘটে।