নুসরত শাহের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ। নুসরত শাহের চারিত্রিক গুণাবলিগুলো লিখ

নুসরত শাহের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ। নুসরত শাহের চারিত্রিক গুণাবলিগুলো লিখ
নুসরত শাহের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ। নুসরত শাহের চারিত্রিক গুণাবলিগুলো লিখ

নুসরত শাহের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ। নুসরত শাহের চারিত্রিক গুণাবলিগুলো লিখ

  • অথবা, বাংলার জাগরণে নুসরত শাহের যে চরিত্র ফুটে উঠেছে তা লিখ ।

উত্তর : ভূমিকা : নুসরত শাহ অভিষিক্ত হবার পর পিতার রাজ্যবিস্তার নীতি অনুসরণ করেছিলেন। নুসরত শাহ বাংলার সুনামকে তার পিতার ন্যায় অক্ষুণ্ণ রেখেছিলেন। 

হুসেন শাহের রাজত্বকালেই তিনি যুবরাজ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। পিতা কর্তৃক মুদ্রা প্রকাশের ক্ষমতাও প্রাপ্ত হয়েছিলেন।

→ নুসরত শাহের চারিত্রিক গুণাবলি : নুসরত শাহ অনেকগুলো সৎগুণাবলির অধিকারী ছিলেন। রাজকার্যে গৃহীত তার ব্যবস্থা থেকেই তা বোঝা যায়। 

নিম্নে তার চারিত্রিক গুণাবলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

১. উদারতা : আলাউদ্দিন হুসেন শাহের মত তিনিও উদার ছিলেন। তিনি পিতার নীতি অনুসরণ করে উদার শাসন নীতি গড়ে তোলেন। 

তিনি শাসন ক্ষেত্রে ধর্মের ভিত্তিতে কোন বৈষম্য গড়ে তোলেননি। তিনি রাজ্যের সকল নাগরিকের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য উদারনীতি গ্রহণ করেছিলেন।

২. শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা : আলাউদ্দিন হুসেন শাহ বাংলায় একটি অরাজক অবস্থা থেকে শান্তি শৃঙ্খলা আনয়ন করেন। এ কারণে তার শাসনকালকে শান্তি ও সমৃদ্ধির যুগ বলা হয়। নুসরত শাহের শাসনামলে এ শান্তি শৃঙ্খলা অব্যাহত রাখা হয়েছিল।

৩. সাহিত্য অনুরাগ : পিতার ন্যায় তিনিও সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ প্রদর্শন করেন। তার সময়ে বিভিন্ন সাহিত্য গ্রন্থ রচিত হয়েছিল। এ সময়ে রচিত বিভিন্ন গ্রন্থে তার নাম পাওয়া যায়। ফলে সাহিত্যের প্রতি তার অনুরাগ ছিল তা সহজেই বলা যায় ।

৪. ধর্মীয় সহিষ্ণুতা : হুসেন শাহ একজন ধর্মসহিষ্ণু শাহ ছিলেন। পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে নুসরত শাহও ধর্মক্ষেত্রে সহনশীল নীতি গ্রহণ করেছিলেন। তার সময়ে ধর্মীয় বাড়াবাড়ির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।

৫. রাজকার্যে নিষ্ঠতা : নুসরত শাহ রাজকার্যে নিষ্ঠতার পরিচয় দেন। তিনি যুবরাজ থাকাকালীন রাজকার্যে জড়িয়ে পড়েন। তিনি প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অবদান রেখেছিলেন। শাসক হওয়ার পরও তিনি রাজকার্যে নিষ্ঠতার পরিচয় প্রদান করেছেন।

৬. স্থাপত্য শিল্পে অবদান : নুসরত শাহের স্থাপত্যকীর্তিরও স্বাক্ষর মেলে। তিনি তার শাসনকাল বিভিন্ন স্থাপত্য নির্মাণ করেছিলেন। গৌড়ের বিখ্যাত বারদুয়ারী বা সোনা মসজিদ তার অমর স্থাপত্যকীর্তি।

৭. ভ্রাতা ও আফগানদের প্রতি ব্যবহার : নুসরত শাহ ভ্রাতা ও আফগান শরণার্থীদের প্রতি যে ব্যবহার করেছেন তা থেকে তার সৎগুণাবলির পরিচয় মেলে। 

তিনি তার ভ্রাতা মাহমুদ শাহকে উত্তরাধিকারী নিয়োগ করেছিলেন। এছাড়া কিছু আফগান শরণার্থীকে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত করেছিলেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, নুসরত শাহ অনেকগুলো সৎগুণাবলির অধিকারী ছিলেন। তিনি শাসক থাকাকালীন যেসব গুণাবলির প্রকাশ করিয়েছেন তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। 

তবে নুসরত শাহের কৃতিত্বপূর্ণ রাজত্বকালেই হুসেন শাহী বংশের পতনের শুরু হয়েছিল। রাজত্বের শেষ দিকে মুঘল আক্রমণ তাকে বেশ সঙ্গীন করে ফেলেছিল। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ