নুর কুতুব উল আলম কে ছিলেন । নূর কুতুব উল আলম সম্পর্কে একটি টীকা লিখ
নুর কুতুব উল আলম কে ছিলেন । নূর কুতুব উল আলম সম্পর্কে একটি টীকা লিখ |
নুর কুতুব উল আলম কে ছিলেন । নূর কুতুব উল আলম সম্পর্কে একটি টীকা লিখ
উত্তর : ভূমিকা : ইসলাম বিস্তার ও মুসলিম সমাজের বিস্তারে যেসব সুফি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন নূর-কুতুব-উল- আলম তাদের মধ্যে অন্যতম। মুঘলমানদের হিন্দু রাজাদের আগমন থেকে রক্ষার জন্য নূর-কুতুব-উল-আলেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
নূর-কুতুব-উল-আলমের পরিচয় : নূর-কুতুব-উল-আলম ছিলেন মধ্যযুগে বাংলার একজন দরবেশ। পান্ডুয়ার পীর আউলিয়াদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী ছিলেন।
তার পিতা শেখ আলাউল হকও একজন পীর ছিলেন। পিতার মতো নূর- কুতুব-উল-আলম ছিলেন চিশতিয়া তরিকার পীর। নূর-কুতুব-উল আলম সব ধরনের কায়িক শ্রম করতেন।
দরগায় আগত ফকিরদের সেবা তিনি ব্যক্তিগতভাবে করতেন। তার পুত্র শেখ রাফকাতউদ্দিন, শেখ আনোয়ার তার কাছে আধ্যাত্বিক শিক্ষালাভ করেছিলেন।
শেখ রাফকাতউদ্দিনের পুত্র শেখ জাহিদও দরবেশ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। শেখ হুসামউদ্দিন মানিকপুরী ছিলেন নূর-কুতুব-উল-আলমের অন্যতম প্রধান মুরিদ।
রাজনৈতিক ভূমিকা : রাজা গণেশের ক্ষমতা দখলের পর বাংলায় মুসলিমদের উপর নির্যাতন শুরু হলে নূর-কুতুব-আলেম জৌনপুরের সুলতান ইব্রাহিম শকীকে বাংলা আক্রমণের অনুরোধ জানান।
অনুরোধে সাড়া দিয়ে ইব্রাহিম শকী সৈন্যবাহিনী নিয়ে এগিয়ে আসেন। নূর-কুতু-আলমের অনুসারীরা সুলতানকে ফিরে যাবার জন্য অনুরোধ জানাতে বলে।
নূর-কুতুব-আলম অনুসারীদের পক্ষে মুসলিম সুলতানকে অনুরোধে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং গণেশকে ইসলাম গ্রহণের শর্ত দেন।
তবে গণেশ ইসলাম গ্রহণ করেননি। তার বদলে তার পুত্র যদু ইসলাম গ্রহণ করেন জালালউদ্দিন মুহাম্মদ নাম গ্রহণ করে মসনদে বসেন। এরপর ইব্রাহিম শকী ফিরে যান।
মৃত্যু : নূর-কুতুব-উল-আলম আনুমানিক ৮১৮ হিজরি বা ১৪১৫ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পর তাকে পান্ডুয়ার শাশ হাজারি দরগায় দাফন করা হয়। তার পিতাকেও এখানে দাফন করা হয়েছিল ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলার মুসলিম শাসনামলে বিভিন্ন সুফি ও সাধকরা এ বাংলার আগমন করেছিলেন। বাংলার মুসলিম শাসন বিস্তারে সুফিদের ভূমিকা অপরিসীম ।
বাংলার মুঘলমানদের উপর যখন হিন্দু রাজারা অত্যাচার শুরু করেন। তখন নূর-কুতুব-উল-আলম এর প্রতিবাদ করে আন্দোলন করেন ।