মোটরসাইকেল কিভাবে কাজ করে আপনি কি জানেন
চলাচলের সুবিধার্থে আমরা বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ব্যবহার করে থাকি। তার মধ্যে মোটরসাইকেল এমন এক ধরনের যানবাহন যা দেখতে অনেকটা ছোট হলেও এর কার্যকারিতা অনেক।
মোটরসাইকেল কিভাবে কাজ করে আপনি কি জানেন |
মোটরসাইকেল এমন এক ধরনের যানবাহন যেটি আমরা যেকোনো স্থানেই সেফটি মেইনটেইন করে পার্কিং করে রাখতে পারি।
আজকে পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সাথে যে বিষয়টি শেয়ার করব সেটি হচ্ছে মোটরসাইকেল কিভাবে কাজ করে। এমন অনেকেই আছেন যারা জানেন না মোটরসাইকেল কিভাবে কাজ করে। যারা এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয় আশা করি তারা আজকের এই পোস্টটি পড়ে জানতে পারবেন।
মোটরসাইকেল কিভাবে কাজ করে
এখন আমরা আলোচনা করব কি কি অংশের সমন্বয়ে মোটরসাইকেল কাজ করে।
মোটরসাইকেলের চাকা
মোটরসাইকেল কিভাবে কাজ করে যদি চিন্তা করি তাহলে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি ধারনায় আসবে সেটি হচ্ছে মোটরসাইকেলের চাকা।
মোটরসাইকেলে সাধারণত দুটি চাকা থাকে। পিছনের দিকে চাকাকে রিয়ার টায়ার বলা হয় এবং সামনের দিকে চাকাকে ফ্রন্ট টায়ার বলা হয়।
মোটরসাইকেলের চাকা ঘোরানোর জন্য যে অংশটি ব্যবহৃত হয় তাকে বেয়ারিং বলে। বেয়ারিং অংশটি ছাড়া চাকা ঘুরানোর কাজটি সম্পন্ন হতো না।
যার ফলে মোটরসাইকেল কাজ করতো না। মোটরসাইকেলে চাকার বাইরে কাজ করার জন্য রিম ব্যবহৃত হয়। রিম এমন একটি পার্ট যা চাকার স্মৃতিশীলতা বজায় রাখে।
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন মোটরসাইকেল এর কাজ পরিচালনার জন্য বিশেষ একটি অংশ। ইঞ্জিন ছাড়া মোটরসাইকেল কাজ করবে না যত প্রকার পার্টস থাকুকনা কেনো। ইঞ্জিন মোটরসাইকেলের পাওয়ারফুল সোর্স হিসেবে কাজ করে।
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন এমন একটি অংশ যা বায়ু দ্বারা পরিচালিত হয়। সাধারণত ইঞ্জিন ওয়েল্ডিং অথবা কাস্টিং প্রক্রিয়ায় ইঞ্জিন তৈরি হয়।
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের বিশেষ কিছু অংশ আছে। যেমন- ইঞ্জিনের অধিকাংশ বা বেশিরভাগ কার্যক্রম গুলি সিলিন্ডারের মাধ্যমে ঘটে থাকে। সিলিন্ডারের চলমান অবস্থায় বিশেষ কিছু পিস্টন কাজ করে থাকে যা সিলিন্ডারকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে সাহায্য করে।
ক্রাংকশাফট্ ইঞ্জিনের এমন একটি অংশ যা পিস্টনের গতিকে ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দিতে পারে। ভ্যালভ্ হচ্ছে ইঞ্জিনের এমন একটি যন্ত্র যা ইঞ্জিনের কাজকর্মগুলোকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
মোটরসাইকেলের দাম ও মান অনুযায়ী ইঞ্জিনের এই পার্টস গুলোর পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মোটরসাইকেল এর ক্যাপাসিটি অনুযায়ী সিলিন্ডার বিভিন্ন ধরনের আছে। যেমন- সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ডুয়াল সিলিন্ডার।
মোটরসাইকেলের সিট
মোটরসাইকেলের আকৃতি ও সাইজ অনুযায়ী সিট তৈরি করা হয়। কারন সিট ব্যতীত যে ব্যক্তি মোটরসাইকেল চালাবে সে তার সেফটি মেনটেন করতে পারবেনা এবং সিট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো অসম্ভব। মোটরসাইকেলের সিটের বিভিন্ন ধরনের ক্যাটাগরি রয়েছে।যেমন-সিঙ্গেল সিট, ডুয়াল সিট, কাস্টম সিট।
এমন কিছু মোটরসাইকেল আছে যেখানে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি বসতে পারবে সেগুলোকে সিঙ্গেল সিট মোটরসাইকেল বলা হয়। যেই মোটরসাইকেলগুলোতে দুজন ব্যক্তি বসতে পারবে সেগুলোকে ডুয়াল সিট মোটরসাইকেল বলা হয়।
কিছু মোটরসাইকেল রয়েছে যেখানে ব্র্যান্ড ও ব্যবহারকারীর পছন্দ অনুযায়ী একক সিট ডিজাইন করা হয় যাকে কাস্টম সিট বলে। বিভিন্ন ধরনের সিট ডিজাইন করার কারণ হলো ব্যবহারকারী অথবা রাইডার যেন তার চাহিদা ও কমফোর্ট অনুযায়ী মোটরসাইকেল চুজ করতে পারে।
মোটরসাইকেলের মিটার
মিটার ছাড়া মোটরসাইকেল এর কাজ করা অসম্ভব। মিটারের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরি রয়েছে। যেমন- মোটরসাইকেলের নির্দিষ্ট গতিপথ নিদর্শন দেয়ার জন্য স্পিডমিটার বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
স্পিডমিটার বাইকের বর্তমান গতির ইঙ্গিত দেয় এবং বাইকটি প্রতি ঘন্টায়কত মাইল বা কিলোমিটার এগিয়ে যাবে তার (mph/kph) এর মাধ্যমে প্রদর্শন করে।
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন কি পরিমাণ মাত্রায় ঘুরছে তার নির্দেশনা দিতে ট্যাচোমিটার কাজ করে। মোটরসাইকেল চালানোর জন্য যেহেতু ফুয়েল প্রয়োজন তাই ফুয়েলের পরিমাপ করার জন্য ফুয়েল মিটার গুরুত্বপূর্ণ।
মোটরসাইকেলে কি পরিমাণ ফুয়েল বাকি রয়েছে বা কতটুকু ফুয়েল সংযুক্ত করতে হবে তা ফুয়েল মিটার ইঙ্গিত প্রদান করে।
মোটরসাইকেলের ব্রেক
ব্রেক মোটরসাইকেলের এমন একটি পার্ট যেটি ছাড়া দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ব্রেক নিয়ন্ত্রণ না করে মোটরসাইকেল চালানো যাবে না।
রাইডারকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে তার সামনের গতিপথ অনুযায়ী কোন জায়গায় ব্রেক করতে হবে। ব্রেক রাইডারের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। ব্রেক বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।
যেই ব্রেক সিস্টেম সাধারণত সামনের সাইডে এবং পিছনের চাকার উপর অবস্থিত সেটিকে ডিস্ক ব্রেক বলা হয়। কিছু ব্রেক সিস্টেম রয়েছে যেগুলো অনেক বছর পুরানো টাইপের হয়ে থাকে এবং পূর্ববর্তী মডেলের মোটরসাইকেলে ব্যবহৃত হতো।
এ সকল ব্রেককে ড্রাম ব্রেক বলে। মোটরসাইকেলে এমন একটি ব্রেক আছে যা নতুন প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্ত এবং চক্রের ব্লক হতে বাধা সৃষ্টি করে।এমনকি মোটরসাইকেলের স্লিপেজ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
এ ধরনের বেক কে এন্টিলক ব্রেকিং সিস্টেম বলে। যেই ব্রেকিং সিস্টেম ফ্রন্ট সাইড এবং ব্যাকসাইড দুই দিকেই ব্রেক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে থাকে তাকে কম্বাইন্ড ব্রেকিং সিস্টেম বলা হয়।
মোটরসাইকেলের লাইট
রাতের বেলা যখন মোটরসাইকেল নিয়ে যেকোনো দূরের স্থানে বা কাছের স্থানে যেখানে যাওয়া হোক না কেন মোটরসাইকেলের লাইট ব্যবহার করা উচিত।
কারণ লাইট ব্যবহার না করলে সামনের দিক দিয়ে কোন যানবাহন বা ব্যক্তি আসছে কিনা তা বোঝা যায় না। মোটরসাইকেলের লাইট ব্যক্তির ও আশেপাশের পরিবেশের নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
মোটরসাইকেলের হর্ন
হর্ন ছাড়া মোটরসাইকেলের সমস্ত কাজ বিফল। রাস্তাঘাটে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হলে সামনে দিয়ে যদি কেউ চলাচল করে তাহলে গুরুতর এক্সিডেন্ট হতে পারে।
সুতরাং সামনে থেকে কেউ আসার পূর্বেই যদি মোটরসাইকেলের হর্ন ব্যবহার করা হয় তাহলে এটি দুই পক্ষের জন্যই সুবিধা জনক।
এতক্ষণ আমরা যে বিশেষ অংশগুলো নিয়ে আলোচনা করলাম সেই বিশেষ অংশের সমন্বয়েই মোটরসাইকেল তার কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে।