লক্ষণ সেনের পরিণতি বর্ণনা কর । লক্ষ্মণ সেনের ভাগ্য বিপর্যয় আলোচনা কর
লক্ষণ সেনের পরিণতি বর্ণনা কর । লক্ষ্মণ সেনের ভাগ্য বিপর্যয় আলোচনা কর |
লক্ষণ সেনের পরিণতি বর্ণনা কর । লক্ষ্মণ সেনের ভাগ্য বিপর্যয় আলোচনা কর
- অথবা, লক্ষ্মণ সেনের ভাগ্যর অবনতি সম্পর্কে লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : হেমন্ত সেনের পুত্র বিজয় সেন রাঢ়দেশের একটি ক্ষুদ্র রাজ্যকে নিজ যোগ্যতায় এক বিশাল সাম্রাজ্যে পরিণত করেন।
সেন বংশের খোদিত লিপিমালা থেকে জানা যায় যে, এ বংশের প্রথম রাজা বিজয় সেন এবং শেষ রাজা ছিলেন লক্ষ্মণ সেন। লক্ষ্মণ তার পিতা বল্লাল সেনের মৃত্যুর পরিণত বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করেন।
তার শাসন আমলে বাংলায় মুসলিম অভিযান হয়। এ অভিযানে লক্ষ্মণ সেন বখতিয়ার খলজির নিকট পরাজিত হন। বাংলা থেকে হিন্দু শাসনের অবসান হয় এবং শুরু হয় মুসলিম শাসনের।
লক্ষ্মণ সেনের ভাগ্য বিপর্যয় : বখতিয়ার খলজির আক্রমণের মাধ্যমে বাংলায় মুসলিম শাসনের গোড়াপত্তন হয় এবং হিন্দু ও বৌদ্ধ শাসনের পতন ঘটে। তুর্কি সেনাপতির তুলনায় লক্ষ্মণ সেন ছিল একজন দুর্বল রাজা।
হিন্দু পুরাণে বর্ণিত ছিল যে, নদীয়া আক্রমণ করবে এমন ব্যক্তি যার হাত আজানুলম্বিত আছে। তাঁর আক্রমণের সেন বংশের পতন হবে।
মাধাইনগর তম্রশাসন হতে জানা যায় যে, ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে লক্ষ্মণ সেন বখতিয়ার খলজির আক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য একটি ‘ঐন্দ্রিয়' 'মহাশক্তি যজ্ঞের আয়োজন করেন।
এ ধরনের যজ্ঞ সাধারণত আসন্ন বিপদ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য করা হয়। তাছাড়া ৮০ বছর বয়সে মুসলিম আক্রমণ প্রতিহত করার মতো সাহস, মানসিকতা কোনোটাই লক্ষ্মণ সেনের ছিল না।
তাই তিনি কোনো উপাই করতে না পেরে নিজ প্রাণ নিয়ে সাম্রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে যান এবং ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, কোনো মানুষের ই- মনানসিকতা সব সময় একই রকম থাকে না। লক্ষ্মণ সেনের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছিল।
কারণ তিনি জানতেন যে, তার রাজ্য মুসলমান শক্তি আক্রমণ করে জয় করে নিবে। এ কথা জানার পরও তিনি মুসলিম শক্তি প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে একটি যজ্ঞের উপর ছেড়ে দেন।
তাই এ থেকে বোঝা যায় যে, লক্ষ্মণ সেন বার্ধক্যে উপনীত হলে তার শরীর মন দুটোই পরিবর্তন হয়ে যায়।