লক্ষ্মণ সেন কেন মুসলিম আক্রমণ প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হন
লক্ষ্মণ সেন কেন মুসলিম আক্রমণ প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হন |
লক্ষ্মণ সেন কেন মুসলিম আক্রমণ প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হন
- অথবা, মুসলিম আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থতার কারণসমূহ কী ছিল?
- অথবা, লক্ষ্মণ সেন মুসলিম আক্রমণ প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হন?
উত্তর : ভূমিকা : সেন শাসনের যুগে লক্ষ্মণ সেনের রাজত্বকাল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি তার পিতার মৃত্যুর পর বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করে পিতৃরাজ্যকে সুরক্ষিত করা ছাড়াও অন্যান্য রাজ্য জয় করে নিজ রাজ্য সীমা বৃদ্ধি করেছিলেন।
কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে তিনি রাজকর্ম থেকে মনোযোগ উঠিয়ে নিয়ে ধর্মকর্মে মনোযোগী হন। তাঁর এ হীন দুর্বলতার সুযোগে বাংলায় মুসলমান আক্রমণ সংঘটিত হয়। বিভিন্ন কারণে লক্ষ্মণ সেন বাংলায় মুসলিম আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যর্থ হন।
→ মুসলিম আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থতার কারণ : নিম্নে মুসলিম আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থতার কারণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. সুরক্ষাজনিত সমস্যা : নদীয়া ছিল সামরিক দিক থেকে অরক্ষিত । কারণ নদীয়া লক্ষ্মণ সেনের উপরাজধানী ছিল। যার ফলে | বখতিয়ার খলজি নদীয়া আক্রমণ করে সহজেই জয় লাভ করে।
২. আকস্মিক আক্রমণ : বখতিয়ার খলজি হঠাং করে এমন এক সময় নদীয়া আক্রমণ করে সে সময় তার সৈন্য বাহিনী এবং তিনিও মধ্যাহ্ন ভোজে ব্যস্ত ছিলেন। ফলে তিনি কোনো উপায় করতে না পেরে পালিয়ে যান ।
৩. রাষ্ট্রীয় অনৈক্য : অভ্যন্তরীণ বিপ্লব ও অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে লক্ষ্মণ সেনের শাসনব্যবস্থার শেষ দিকে তাঁর প্রচণ্ড অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছিল, যা লক্ষ্মণ সেনের ব্যর্থতার অন্যতম একটি কারণ হিসেবে বিবেচিত ।
৪. পরিণত বয়স : মুসলমান আক্রমণের সময় লক্ষ্মণ সেন বার্ধক্যে উপনীত হয়েছিলেন। ফলে তাঁর শাসন কার্যক্রমে ত্রুটি দেখা দেয়, যা তাঁর পতনকে ত্বরান্বিত করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, লক্ষ্মণ সেনকে নদীয়ার পতনের জন্য এককভাবে দায়ী করা যায় না। কারণ নিজ রাজ্য বাঁচানোর চেষ্টা সবার মধ্যেই থাকে। মূলত লক্ষ্মণ সেনের পরিবেশ পরিস্থিতি তাকে বিফলতার দিকে পর্যবসিত করে।
মুসলিম বীর বখতিয়ার খলজি লক্ষ্মণ সেনের রাজ্যের বিভিন্ন দিক লক্ষ করেই নদীয়া আক্রমণ করে জয় করে নেন। ফলে বাংলায় প্রথমবারের মতো মুসলমান শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।