লামা তারানাথ কে ছিলেন । লামা তারানাথ সম্পর্কে কি জান
লামা তারানাথ কে ছিলেন । লামা তারানাথ সম্পর্কে কি জান |
লামা তারানাথ কে ছিলেন । লামা তারানাথ সম্পর্কে কি জান
- অথবা, লামা তারানাথ পরিচয় দাও ।
- অথবা, লামা তারানাথ কে ছিলেন?
উত্তর : ভূমিকা : প্রায় চারশত বছর যাবৎ বাংলায় পাল শাসন অব্যাহত ছিল এবং উল্লেখ্য যে, পালবংশের শাসকবৃন্দ সবাই ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।
বাংলার প্রথম স্বাধীন নরপতি শশাঙ্কের মৃত্যুর পর প্রায় একশত বছর চরম অরাজকতা চলছিল। এ পরিস্থিতিকে 'মাৎস্যন্যায়' বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এরূপ অবস্থায় বাংলায় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেন পালবংশ। গোপালের নেতৃত্বে এ বংশ তাদের যাত্রা শুরু করেন এবং প্রায় চারশ বছর শাসন করেছিলেন।
তাদের এ শাসন কাল সম্পর্কে জানার জন্য সমসাময়িক পর্যটক ও তাম্রলিপির উপর নির্ভর করতে হয়। সেকালের একজন অন্যতম পর্যটক ছিলেন লামা তারানাথ ।
লামা তারানাথের পরিচয় : লামা তারানাথ ছিলেন পাল আমলের সমসাময়িক একজন পর্যটক। তার ভ্রমণ বৃত্তান্ত থেকে আমরা পালবংশের ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি।
লামা তারানাথ ছিলেন বিকতের অধিবাসী। তিনি গোপালের ক্ষমতা লাভ সম্পর্কে একটা রূপকথার অবতারণা করেছেন।
তার মতে শশাঙ্কের মৃত্যুর পর এ বাংলায় যখন চরম অরাজকতা চলছিল তখন এহেন পরিস্থিতি থেকে মুক্তির পথ মানুষ খুঁজতে লাগল।
শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা একমত হয়ে আইনানুগ শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য একজন রাজা নির্বাচিত করলেন। কিন্তু নির্বাচিত রাজাকে রাতে এক কুৎসিৎ নাগরাক্ষসী মেরে ফেলে।
এরপর আবার রাজা নির্বাচিত হলে সবাইকে নাগরাক্ষসী মেরে ফেলে। এভাবে কয়েক বছর কেটে যায়।একদিন চণ্ডিদেবীর একভক্ত একবাড়িতে এসে দেখেন সে বাড়ির সকলেই বিষয়।
তিনি তার কারণ জানতে চাইলে তারা উত্তর দেয় ঐ বাড়ির একজন ছেলে রাজা নির্বাচিত হয়েছেন। যাকে নাগরাক্ষসী খেয়ে ফেলবে।
সেই আগন্তুক সেই বাড়ির ছেলের পরিবর্তে নিজেই রাজা হওয়ার দায়িত্ব নিতে চাইলেন। তারা খুশি হলো এবং আগন্তুক রাজা হয়ে গেলেন।
সে রাত্রিতে কুৎসিৎ নাগরাক্ষসী এলে আগন্তুক চুণ্ডাদেবীয় মহিমাযুক্ত লাঠি দিয়ে একটা আঘাত করলে রাক্ষসী মারা যায়। পরদিন তাকে জীবিত দেখলে সকলেই অবাক হয়ে যায়।
পর পর সাতদিন তিনি এভাবে রাজা নির্বাচিত হন । অবশেষে তার দক্ষতার জন্য জনগণ তাকে রাজা নিবাচিত করল এবং নাম দিল গোপাল ।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে পর্যটক, ব্যবসায়ী প্রভৃতির অবদান অপরিসীম। পালবংশের ইতিহাস রচনায়ও এরকম অপরিসীম অবদান রেখেছেন লামা তারানাথ।
তারানাথ গোপাল সম্পর্কে যেসব বিবরণ দিয়ে গেছেন তা এক মূল্যবান সম্পদের আকর। এ বিবরণী থেকে গোপালসহ পালবংশের সম্পর্কে বহু তথ্য জানা যায় ৷