কৌলিন্য প্রথা কাকে বলে । কৌলিন্য প্রথার বিকাশ সম্পর্কে লিখ
কৌলিন্য প্রথা কাকে বলে । কৌলিন্য প্রথার বিকাশ সম্পর্কে লিখ |
কৌলিন্য প্রথা কাকে বলে । কৌলিন্য প্রথার বিকাশ সম্পর্কে লিখ
- অথবা, কার সময়ে কিভাবে কৌলিন্য প্রথার বিকাশ ঘটে?
উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে বল্লাল সেন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। তিনি তার পিতা বিজয় সেনের মৃত্যুর পর প্রায় ১১৬০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন।
প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে যে কয়জন শাসক তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য অমর হয়ে আছেন তাদের মধ্যে বল্লাল সেনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বল্লাল সেন বিদ্বান ও বিদ্যোৎসাহী রাজা ছিলেন। তিনি বাংলার ইতিহাসে কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তক হিসেবে অমর হয়ে আছেন ।
→ কৌলিন্য প্রথার বিকাশ : ব্রাহ্মণ, বৈদ্য ও কায়স্থ শ্রেণির সামাজিক আচার ব্যবহার, বিবাহ প্রভৃতি নানা বিষয়ে কুলীন শ্রেণির লোকদের জন্য যে বিশেষ রীতি বা প্রথার প্রবর্তন করা হয় তাকে কৌলিন্য প্রথা বলে।
প্রকৃতপক্ষে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় এ প্রথার প্রবর্তন করেন। তবে সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন এ প্রথাকে যথেষ্ট সমর্থন করতেন। তিনি এ প্রথার প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন ।
তার রাজত্বকালে এ প্রথা ব্যাপক প্রসারতা লাভ করে। তিনি এ প্রথা প্রচারের জন্য আরাকান, উড়িষ্যা ও নেপালে বহু ধর্ম প্রচারক পাঠান।
এছাড়া কলিঙ্গ, মগধ মিথিলা ও বঙ্গেও কৌলিন্য প্রথার প্রসার লাভ করে। কৌলিন্য প্রথা প্রবর্তনের উদ্দেশ্য ছিল কুলীন শ্রেণির ন্যায়পরায়ণতা, জাতিগত পবিত্রতা, সততা প্রভৃতি সদগুণের বৃদ্ধি করা।
কিন্তু অনেকের মতে, কৌলিন্য প্রথা প্রবর্তনের মধ্যে বল্লাল সেনের রাজনৈতিক অভিসন্ধি ছিল। বাংলায় সেসব ব্রাহ্মণ বা অন্যান্য শ্রেণি তাকে সমর্থন করতো না তাদের দমনের উদ্দেশ্যে তিনি এ অভিনব প্রথার প্রবর্তন করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, হিন্দু সমাজে কৌলিন্য প্রথার বিকাশ সাধনে বল্লাল সেনের অবদান অপরিসীম। এ প্রথার বিকাশ সাধনের ফলে হিন্দু সমাজ এক পবিত্র রূপ পরিগ্রহণ করে, যার ফলে জনগণ এ প্রথাকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করে।
আর এরই ফলশ্রুতিতে কৌলিন্য প্রথা ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র বাংলাসহ আরও বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে। যাই হোক বল্লাল সেনের রাজত্বকালে এ প্রথা বিকাশ লাভের জন্য বল্লাল সেনকে এ প্রথার উদ্ভাবক ও প্রবর্তক বলা হয়।