খলজি মালিকদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজিকে শ্রেষ্ঠ বলা হয় কেন

খলজি মালিকদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজিকে শ্রেষ্ঠ বলা হয় কেন
খলজি মালিকদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজিকে শ্রেষ্ঠ বলা হয় কেন

খলজি মালিকদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজিকে শ্রেষ্ঠ বলা হয় কেন

উত্তর : ভূমিকা : আলী মর্দান খলজির মৃত্যুর হুসামউদ্দিন ইওজ খলজি গিয়াসউদ্দিন উপাধি ধারণ করে ১৯১২ সালে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। 

তিনি সিংহাসনে আরোহণ করে সকল অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমন করে রাজ্য সুপ্রতিষ্ঠায় মনোনিবেশ করেন। 

মুসলিম বাংলায় স্বাধীন সালতানাত প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তিনি ইতিহাসে এক গৌরবময় স্থান দখল করে আছেন। 

এসব কারণে এলজি মালিকদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজিকে শ্রেষ্ঠ শাসক হিসেবে অভিহিত করা হয়।

→ খলজি মালিকদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজিকে শ্রেষ্ঠ শাসক বলার কারণ : যে সকল কারণে খলজি মালিকদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজিকে শ্রেষ্ঠ শাসক বলা হয় নিম্নে তা আলোচনা করা হলো :

১. প্রথম স্বাধীন সুলতান : বখতিয়ার খলজির মৃত্যুর পর খলজি মালিকদের মধ্যে অন্তরোধ দূর করে ইওজ খলজি বাংলায় মুসলিম শাসন সুদৃঢ়ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করেন। 

তিনি বাংলার প্রথম স্বাধীন সুলতান ছিলেন। তিনি সামান্য অবস্থা থেকে নিজ বুদ্ধি বিবেচনা কর্মদক্ষতা ও যোগ্যতার দ্বারা বাংলায় একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

২. সুদক্ষ শাসক : ইওজ খলজি শুধুমাত্র একজন সমরকুশল সেনানায়ক ও কূটনীতিক রাজনীতিবিদ ছিলেন না তিনি একজন সুদক্ষ শাসকও ছিলেন। 

তার দীর্ঘ ১৪ বছরের শাসন কালে দেশের সর্বত্র শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তিনি সবসময় প্রজাদের মঙ্গল কামনায় ব্যবস্থা থাকতেন ।

৩. রাজ্যবিস্তার : গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজি সিংহাসনে আরোহণ করে অভ্যন্তরীণ, বিদ্রোহ দমন করে রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করেন। 

তিনি উড়িষ্যা, কামরুপ ও ত্রিহুত অভিযান করে তা জয় করেন। এসব অঞ্চলের হিন্দু রাজাগণের নিকট থেকে তিনি কর আদায় করতেন।

৪. নৌবাহিনী গঠন : বাংলায় মুসলিম শাসকদের মধ্যে ইওজ খলজিই প্রথম নৌবাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন। কারণ বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। তাছাড়া তার প্রতিষ্ঠিত রাজধানী নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ার কারণে বহিঃশত্রুর আক্রমণের ভয় ছিল। 

এজন্য গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজি বুঝতে পেরেছিলেন যে নৌবাহিনী ছাড়া অশ্বারোহী তুর্কি বাহিনীর পক্ষে বাংলাদেশ শাসন করা সম্ভব নয়।' তিনি সামরিক বাহিনীর গুরুত্ব বৃদ্ধির জন্য নৌবাহিনী গঠন করেন।

৫. মুসলিম সমাজ প্রতিষ্ঠা : ইওজ খলজি একজন প্রজাদরদী শাসক ছিলেন। তিনি একজন ধর্মপ্রাণ মুঘলমান ছিলেন। ইওজ খলজি সমাজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আলেম ও সুফিদের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।

তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচারকদের বাহক হিসেবে মনে করে ধর্মপরায়ণের লোকদের ভরণপোষণ ও জায়গিরের ব্যবস্থা করেন ।

৬. মুদ্রা প্রচলন ও সুলতান উপাধি ধারণ : সুলতান গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজি নিজ নামে মুদ্রা প্রচলন করেন। তিনি আব্বাসীয় খলিফা আল নাসিরের নিকট থেকে সনদ লাভ করেছিলেন। 

তাই আব্বাসীয় খলিফা আল নাসিরের নাম উৎকীর্ণ করেছিলেন। এছাড়া তিনি সুলতান উপাধি ধারণ করেছিলেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজি একজন সুশাসক ছিলেন। নৌবাহিনী গঠন তার দূরদর্শিতার পরিচয় বহন করে। 

বাংলার শিশু মুসলিম রাজ্যঅন্তর্বিরোধের অবসান ঘটিয়েও তার সুষ্ঠু শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করে ও রাজ্যবিস্তারে সচেষ্ট হয়েছিলেন। এজন্য ইওজ খলজি বাংলার শ্রেষ্ঠ সুলতান বলা হয়ে থাকে ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ