খালিমপুর তাম্রশাসনে ধর্মপালের সামরিক কৃতিত্ব সম্পর্কে আলোচনা কর
খালিমপুর তাম্রশাসনে ধর্মপালের সামরিক কৃতিত্ব সম্পর্কে আলোচনা কর |
খালিমপুর তাম্রশাসনে ধর্মপালের সামরিক কৃতিত্ব সম্পর্কে আলোচনা কর
- অথবা, খালিমপুর তাম্রশাসনে ধর্মপালের সামরিক অবদান তুলে ধর।
উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলা ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো পাল শাসন। আর পাল শাসনের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলতে ধর্মপালকে বুঝায়। ধর্মপালের সামরিক শাসনের কৃতিত্ব সম্পর্কে খালিমপুর তাম্রলিপিতে বিবরণ দেওয়া আছে ।
→ খালিমপুর তাম্রলিপিতে ধর্মপালের সামরিক কৃতিত্ব : নিম্নে খালিমপুর তাম্রলিপিতে ধর্মপালের সামরিক কৃতিত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :
১. তিনি (ধর্মপাল) মনোহর ভ্রু-ভঙ্গি বিকাশে অর্থাৎ চোখের ইঙ্গিত দ্বারা কাণ্যকুঞ্জে রাজ অভিষেক সম্পন্ন করেছিলেন।
ভোজ, মৎস্য, মদ্র, কুরু, যদু, যবন, অবন্ত, গান্ধার এবং কীর প্রভৃতি জনপদের নরপ্রতিগণকে প্রণতিপরায়ণ চঞ্চলাবনত মস্তকে সাধু সাধু বলে এর সমর্থন করেছিলেন এবং হৃষ্টচিত্তে পাঞ্চালবৃদ্ধ কর্তৃক স্বঅভিষেকের স্বর্ণ কলস উদ্বৃত্ত করেছিলেন। (খালিমপুর তাম্রলিপির দ্বাদশ শ্লোক)
২. এখানে গঙ্গাবক্ষে অসংখ্য বিশাল রণতরীর সমাবেশ সেতুবন্ধন রামেশ্বরের শৈল শিখর শ্রেণি বলে মনে হতো। এখানকার অসংখ্য রণহস্তী দিন শোভাকে ম্লান করে নিবিড় মেঘের শোভা সৃষ্টি করতো।
উত্তর পথের বাহু সামন্ত রাজা যে অগণিত অশ্ব উপঢৌকনস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন, তাদের ক্ষুরোথিত ধুলিজালে এ স্থানের চতুর্দিক ধূসরিত হয়ে থাকত এবং রাজা রামেশ্বর ধর্মপালের সেবার জন্য সমস্ত জম্বুদ্বীপ (ভারতবর্ষ) হতে যে সমস্ত রাজাগণ এখানে উপস্থিত হয়েছিলেন তাদের অনন্ত পদভরে বসুন্ধরা অনবত হয়ে থাকত ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ধর্মপাল সামরিক শাসনের ক্ষেত্রে যে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন তা তাঁকে জম্বুদ্বীপের সমর শাসক বলা চলে।
তিনি পিতার কাছ থেকে শুধু গৌড় রাজ্য উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিলেন কিন্তু স্বীয় প্রতিভা দ্বারা তিনি একে বিশাল সাম্রাজ্যে পরিণত করেন।