কবির কে ছিলেন । ভক্তিবাদী আন্দোলনের নেতা হিসেবে কবিরের পরিচয় দাও
কবির কে ছিলেন । ভক্তিবাদী আন্দোলনের নেতা হিসেবে কবিরের পরিচয় দাও |
কবির কে ছিলেন । ভক্তিবাদী আন্দোলনের নেতা হিসেবে কবিরের পরিচয় দাও
- অথবা, কবিরের পরিচয় দাও ।
উত্তর : ভূমিকা : উত্তর ভারতে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির পথপ্রদর্শক ভক্তিবাদীদের মধ্যে কবির সবচেয়ে বিশিষ্ট।
তিনি রামানুজ রামানন্দের প্রধান শিষ্য ছিলেন। কবির তার উদারনৈতিক মতাদর্শ প্রচার করার মাধ্যমে বিশাল ভক্ত সমাজ রেখে গেছেন।
তিনি একটি অনন্য ধারণা ও বিশ্বাস নিয়ে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের ঐক্য অর্জনের জন্যও যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন।
নিম্নে কবিরের পরিচয় তুলে ধরা হলো :
→ কবির পরিচয়: রামানন্দের প্রধান শিষ্য কবির প্রথম জীবনে মুসলমান ছিলেন। তার জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ ও বছর জানা যায়নি। কিংবদন্তি অনুসারে তিনি ছিলেন একজন ব্রাহ্মণের পুত্র।
নিরু নামে এক মুসলিম তাঁতি তাকে মানুষ করেন। প্রথম দিকে তিনি তাঁতি পেশাকেই গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে সংসার ধর্মে তার মন বসে না।
ধর্মের দিকেই তিনি অধিক আকৃষ্ট ছিলেন। ফলে বারানসীতে (কাশী) থাকাকালীন কবির রামানন্দের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং হিন্দি ভাষায় ধর্ম, প্রচার করতে থাকেন।
তিনি ইসলাম ধর্ম ও হিন্দুধর্মের মধ্যে কোনো প্রকার ভেদাভেদ করেননি। ঈশ্বরকে তিনি আল্লাহ, রাম, সাঁই, হরি প্রভৃতি বিভিন্ন নামে অভিহিত করেন।'
মূর্তিপূজা বা নামাজ উভয়েই তার সমান আপত্তি ছিল। তার মতে হিন্দু ও মুসলিম একই মৃত্তিকা দ্বারা নির্মিত দুটি পাত্র বিশেষ। তার রচিত ‘দোহা' দার্শনিক তত্ত্বে সমৃদ্ধ।
অন্তরকে পাপমুক্ত ও ভগবানের প্রতি আন্তরিক ভক্তি প্রদর্শনই হলো সব ধর্মের সারকথা। রাম ও আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। এটি ছিল তার মূল বাণী। বহু হিন্দু-মুসলিম তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, অন্তরকে পাপমুক্ত এবং ভগবানের প্রতি আন্তরিক ভক্তি প্রদর্শনই হলো সর্ব ধর্মের সারকথা। কবির হিন্দু দর্শন ও সুফি-সাধকদের দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন।
তার প্রচারিত বাণীতে মুক্ত মুগ্ধ হয়ে হিন্দু-মুসলিম, নির্বিশেষে অনেকেই তার শিষ্য হন ও তার প্রচারিত ধর্মকে প্রচার ও প্রসার করতে থাকে ।