গৌড়ের ঐতিহাসিক স্থান গুলির নাম ও তাদের গুরুত্ব লেখ
গৌড়ের ঐতিহাসিক গুরুত্ব লেখ । গৌড়ের ঐতিহাসিক গুরুত্ব নিরূপণ কর |
গৌড়ের ঐতিহাসিক স্থান গুলির নাম ও তাদের গুরুত্ব লেখ
উত্তর: ভূমিকা: গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর বাংলায় গৌড় ও বঙ্গ নামে দুটি রাজ্যের উদ্ভব হয়। সাধারণত উত্তরবঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গের সমন্বয়ে গৌড় সাম্রাজ্য গঠিত হয়েছিল।
যাইহোক, এই রাজ্যের কোন নির্দিষ্ট সীমানা ছিল না। কিন্তু এখান থেকে পুন্ড্র, সুহ্ম, সমতট প্রভৃতি পুরানো নামগুলো বিলুপ্ত হয়ে যায়। তখন থেকেই বাংলায় গৌড় ও বঙ্গ নাম প্রচলিত হয়ে যায়।
→গৌড় রাজ্য: বাংলার উত্তর ও পশ্চিম অংশের সমন্বয়ে গৌড় রাজ্য গঠিত হয়েছিল। গৌড় রাজ্যের আলোচনা নীচে দেওয়া হল:
1. অবস্থান: গৌড় সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল পশ্চিমবঙ্গ এবং মগধের উত্তরাংশ। 544 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই বিশাল ভূমিতে গৌড় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
2. শাসন: পরবর্তীকালে গুপ্ত রাজবংশের শাসকরা গৌড় সাম্রাজ্য শাসন করেন। মহাসেন গুপ্ত উত্তরবঙ্গে তার কর্তৃত্ব বজায় রেখেছিলেন বলে মনে করা হয়।
3. সময়কাল: গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর, গৌড় সাম্রাজ্য 6ষ্ঠ শতাব্দীর শুরু থেকে 6ষ্ঠ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত পরবর্তী গুপ্ত রাজবংশ দ্বারা শাসিত হয়েছিল। এবং ষষ্ঠ শতাব্দীর মাঝামাঝি এলাকাটি গৌড় টাউনশিপ নামে পরিচিত ছিল।
4. রাজনৈতিক পরিবর্তন: গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের সুযোগ নিয়ে কনৌজের মৌখারি রাজবংশ গৌড় দখলের চেষ্টা করে।
কিন্তু পরবর্তী গুপ্ত রাজবংশ তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে এবং গৌড় রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। পরে ঈশানবর্মণ গৌড়দের বিতাড়িত করে সমুদ্রে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেন।
পরবর্তীকালে, মহাসেন গুপ্ত কামরূপের রাজা সম্বিলিতবর্মনের আক্রমণ প্রতিহত করে গৌড়ে তার অধিকার রক্ষা করেন।
5. শশাঙ্কের ক্ষমতা লাভ: মহাসেন গুপ্ত কালচুরি বাহিনীর কাছে পরাজিত হলে গৌড়ের উপর পরবর্তী গুপ্ত রাজবংশের শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সুযোগে শশাঙ্ক বাংলার শাসক হন।
6. স্বাধীন সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা: শশাঙ্ক গৌড়ে ক্ষমতায় আসেন এবং গৌড়ে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করেন।
উপসংহার: শেষ পর্যন্ত, মহান গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর, উত্তর ভারত জুড়ে ছোট ছোট স্থানীয় রাজবংশের আবির্ভাব ঘটে। এবং এর প্রভাবে গুপ্ত রাজবংশ পরবর্তীতে বাংলার উত্তর ও পশ্চিম অংশ দখল করে নেয়।
কিন্তু উত্তর ভারত বিভাজন বাংলাকেও প্রভাবিত করে। ফলস্বরূপ, একটি রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে, শশাঙ্ক ক্ষমতা দখল করেন এবং গৌড়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করেন।