ইতিহাসের উৎস হিসেবে রিয়াজ উস সালাতিন গ্রন্থটি মূল্যায়ন কর
ইতিহাসের উৎস হিসেবে রিয়াজ উস সালাতিন গ্রন্থটি মূল্যায়ন কর |
ইতিহাসের উৎস হিসেবে রিয়াজ উস সালাতিন গ্রন্থটি মূল্যায়ন কর
- অথবা, মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাস পুনর্গঠনের উৎস হিসেবে 'রিয়াজ-উস-সালাতিন' গ্রন্থটির অবদান মূল্যায়ন কর।
- অথবা, ‘রিয়াজ-উস-সালাতিন' মধ্যযুগের সুলতানি শাসনামলে বাংলার ইতিহাসের অন্যতম উৎস সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভূমিকা : মৌলিক বা সমসাময়িক গ্রন্থ না হলেও এ গ্রন্থটি তথ্য নির্ভরশীল। রিয়াজ-উস-সালাতিন বিভিন্ন ফারসি গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত তথ্যের উপর ভিত্তি করে লেখা। এখানে মুসলিম রাজত্বকালে বাংলা, বিহার ও আসামের ইতিহাস বিধৃত হয়েছে।
→ ‘রিয়াজ-উস-সালাতিন' গ্রন্থটির অবদান : মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাস পুনর্গঠনের উৎস হিসেবে ‘রিয়াজ-উস-সালাতিন’ গ্রন্থটির অবদান আলোচনা করা হলো :
১. রিয়াজ-উস-সালাতিন : সৈয়দ গোলাম হোসেন সলিম ১৭৮৭-১৭৮৮ সালে এ গ্রন্থটি রচনা করেন। এটি অপেক্ষাকৃত আধুনিক গ্রন্থ। বাংলার ভৌগোলিক অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সুন্দর বর্ণনা আছে এ গ্রন্থটিতে।
২. বিষয়বস্তু : বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থা, জলবায়ু, উৎপন্ন কৃষি ও শিল্পদ্রব্য এ গ্রন্থের বিষয়বস্তু। বাংলাদেশের সুবা ১৯ টি ভাগে বিভক্ত।
এছাড়াও ঢাকা, মুর্শিদাবাদসহ নানা বড় বড় শহরের ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে রিয়াজ- উস-সালাতিন আলোকপাত করেছে।
৩. ঐতিহাসিক মূল্য : মেজর চার্লস স্টুয়ার্ট ‘রিয়াজ-উস- সালাতিনের' উপর নির্ভর করে ‘বাংলার ইতিহাস' (১৮১৩) গ্রন্থটি প্রণয়ন করেন।
ঐতিহাসিক গ্রন্থ হিসেবে এর মূল্য অসীম। তবে এ গ্রন্থের বিষয়বস্তু, তারিখ ও ঐতিহাসিক ঘটনাবলির সন নিয়ে মত পার্থক্য আছে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আরবি ও ফারসি ভাষায় লিখিত যে সমস্ত গ্রন্থ মুসলিম বাংলার ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, তাদের মধ্যে ‘রিয়াজ-উস-সালাতিন' অন্যতম।
বিশেষ করে বাংলার ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে এ গ্রন্থটিতে বহুমূল্যবান তথ্য সন্নিবেশিত আছে ।