দেবপালের কৃতিত্ব আলোচনা কর । শাসক হিসেবে দেবপালের অবদান আলোচনা কর
দেবপালের কৃতিত্ব আলোচনা কর । শাসক হিসেবে দেবপালের অবদান আলোচনা কর |
দেবপালের কৃতিত্ব আলোচনা কর । শাসক হিসেবে দেবপালের অবদান আলোচনা কর
- অথবা, দেবপালের কৃতিত্ব লেখ।
উত্তর : ভূমিকা : ধর্মপালের মৃত্যুর পর রত্নাদেবীর গর্ভজাত পুত্র দেবপাল পাল সাম্রাজ্যের সিংহাসনে বসেন। ঐতিহাসিক ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার এর মতে, পরমেশ্বর পরমভট্টারক মহারাজাধিরাজ দেবপাল পিতার উপযুক্ত পুত্র ছিলেন এবং পিতৃসাম্রাজ্য অক্ষুন্ন রাখতে সমর্থ হয়েছিলেন। তিনি সাম্রাজ্য শাসন করেছেন সুনিপুণভাবে এবং শাসক হিসেবেও ছিলেন অতুলনীয়।
দেবপালের কৃতিত্ব : নিম্নে দেবপালের কৃতিত্বসমূহ সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :
১. বিজেতা হিসেবে : আনুমানিক ৮২১ থেকে ৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় ৪০ বছর রাজত্বকালে দেবপাল শুধুমাত্র পিতৃ সাম্রাজ্যকে অক্ষুন্ন রাখেননি; বরং সামরিক প্রতিভা বলে তিনি বিভিন্ন অঞ্চল জয় করেছেন। তিনি অন্যান্য পাল রাজাদের তুলনায় যুদ্ধে বেশি জয়লাভ করেছেন।
২. রাজ্য বিজয় : সম্রাট দেবপাল তার রাজত্বকালে বহু সাম্রাজ্য অধিকার করতে সমর্থ হন। তার মধ্যে প্রাগজ্যোতিষ (আসাম) অভিযান, উৎকল (উড়িষ্যা) অভিযান, হুন রাজ্য অভিযান, কম্বোজ অভিযান, প্রভৃতি অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করেন।
৩. শাসক হিসেবে : দেবপাল দেবপাল তার স্বীয় প্রতিভা ও বাহুবলে আর্যাবর্তে বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার সময়ে পাল সাম্রাজ্য গৌরবের উচ্চ শিখরে আরোহণ করেছিল।
শাসক হিসেবে তার উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বসমূহ হলো- সাম্রাজ্যের সীমানা বৃদ্ধি, শ্রেষ্ঠ সমরনায়ক, সংস্কৃত ভাষার পৃষ্ঠপোষক, স্থাপত্য ও ভাস্কর্য শিল্পে অবদান ইত্যাদি।
৪. ধর্মীয় পৃষ্ঠপোষক : দেবপাল তার রাজত্বকালে বহু বৌদ্ধ বিহার স্থাপন করেন। তিনি মগধের বৌদ্ধ মঠগুলোর সংস্কার সাধন করেন। এছাড়া তিনি নালন্দায় কয়েকটি মঠ এবং বুদ্ধ গয়ায় একটি বড় মন্দির নির্মাণ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে শাসক হিসেবে একটি উজ্জ্বলতম নাম হলো দেবপাল । পাল শাসকদের মধ্যে দেবপাল একমাত্র সম্রাট যিনি আজীবন কোনো যুদ্ধে পরাজয়বরণ করেন নি।