দেববংশ সম্পর্কে জানার উপাদানসমূহ আলোচনা কর
দেববংশ সম্পর্কে জানার উপাদানসমূহ আলোচনা কর |
দেববংশ সম্পর্কে জানার উপাদানসমূহ আলোচনা কর
- অথবা, সেনবংশের ইতিহাস রচনায় প্রাপ্ত উৎসের বিবরণ দাও।
উত্তর : ভূমিকা : আজকের পৃথিবীর মতো এত আধুনিক ছিল না সেই ষষ্ঠ শতক। তাই সেই পেছনের যুগের ইতিহাস এত আধুনিকভাবে জানা সম্ভব নয়।
সেই যুগের ইতিহাস সম্পর্কে অথবা সেই যুগ সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের যে যুগের ব্যবহৃত জিনিস পত্র, প্রাপ্ত নিদর্শন, দলিলপত্রের উপর নির্ভর করতে হয়। আর এসব নিদর্শন ও পলিলপত্র থেকে দেববংশ সম্পর্কে জানা যায়।
] দেববংশের উৎসসমূহ : দেববংশ সম্পর্কে জানার জন্য তেমন কোন পর্যাপ্ত উৎস আমাদের হাতে নেই যতটুকু রয়েছে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:
১. তাম্রশাসন : তাম্রশাসন থেকে দেববংশ সম্পর্কে জানা যায়। জানা যায় প্রথম দেববংশের পরিচয়। শ্রী শান্তিদেবের পর চট্টগ্রাম তাম্রশাসন থেকে জানা যায় দ্বিতীয় সেববংশের পরিচয়।
জানা যায় রাজারা বংশানুক্রমিকভাবে রাজত্ব করতো। দেববংশের সময়কাল ছিল ৭৫০-৮০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। তাম্রশাসনগুলো হতে একটি বিষয় সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায় যে দেববংশের রাজারা সমতট অঞ্চলে রাজত্ব করতেন।
তাম্রশাসন থেকে জানা যায় যে দেবংশ কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত হতো। সোজা কথা সে সময় তাদের রাজধানী ছিল। যার রাজধানী থেকে দেববংশ পরিচালিত হতো।
দেব বর্তে তাদের রাজধানী ছিল। শ্রীভবদের তাম্রশাসন থেকে জানা যায় কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে দেবপর্বত অবস্থিত ছিল । এসব তথ্য থেকে দেববংশ সম্পর্কে জানা যায়।
২. প্রাপ্ত মুদ্রা : দেব রাজবংশের প্রাপ্ত মুদ্রা থেকে দেববংশের চারজন রাজার নামও তাদের উপাধি সম্পর্কে জানা যায়। দেব রাজারা ছিল সার্বভৌম রাজা।
প্রাপ্ত মুদ্রা থেকে জানা যায় যে ৭৫০-৮০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত টিকে থাকা রাজবংশ খড়গ বংশের পতনের পর প্রতিষ্ঠিত হয়
৩. শ্রী শান্তিদেবের তাম্রশাসন : শ্রী কান্তিদেবের তাম্রশাসন থেকে দ্বিতীয় দেববংশের পরিচয় পাওয়া যায়। চট্টগ্রামে প্রাপ্ত শ্রী শান্তিদেবের তাম্রশাসন থেকে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় একটি দেববংশের পরিচয় পাওয়া যায়।
এ তাম্রশাসন থেকে শাস্ত্রিদেবের পিতা ধনদত্ত ও তার মাতা অদ্ভদকের নাম জানা যায়। শান্তিদেব প্রথম দেববংশের পরবর্তী সময় দেববংশের শাসক ছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
৪. অন্যান্য তথ্য : দেববংশ সম্পর্কে জানার তেমন কোনো উৎস নেই শুধুমাত্র মুদ্রা ও তাম্রশাসনই প্রধান জানার উৎস এছাড়াও তাদের ব্যবহার্য্য বাসন কোসন, মাটির পাত্র, পাত্রের ছাপ, থেকেই দেববংশ সম্পর্কে জানার জন্য উৎস পাওয়া যায়। আর সবখানে গবেষণা চলছে দেববংশ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় প্রাপ্ত যেসব উৎস পাওয়া যায় দেববংশ সম্পর্কে জানতে তা পর্যাপ্ত নয় যতটুকু পাওয়া গেছে তাতে দেববংশে ইতিহাস আরও সমৃদ্ধ হবে বলে ধারণা করা যায় ।