দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় পর্যায়ে মুসলিম আক্রমণ কী
দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় পর্যায়ে মুসলিম আক্রমণ কী |
দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় পর্যায়ে মুসলিম আক্রমণ কী
- অথবা, দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় পর্যায়ে মুসলিম আক্রমণ সম্পর্কে একটি টীকা লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে সেন রাজত্বের অভ্যুদয় ঘটে একাদশ শতাব্দীতে। সেন শাসন আমল প্রতিষ্ঠার পর থেকে সেন বংশের বিভিন্ন শাসকগণ সেন বংশের শাসন ক্ষমতাকে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করতে যথেষ্ট কৃতিত্বের পরিচয় দেন।
বহুকাল বাংলায় সেন শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল। কিন্তু সেন শাসনামলের শেষের দিকের দুর্বল শাসকদের সময় বিশেষিত লক্ষ্মণ সেনের শাসন আমলে বাংলায় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করে মুসলমান শক্তি ।
→ দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় পর্যায়ে মুসলিম আক্রমণ : লক্ষ্মণ সেনের রাজত্বকালের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা হলো মুসলিম আক্রমণ। তার রাজত্বকালে মহাদুর্যোগ দেখা দেয়।
সেন বংশের এক সময়ের শৌর্যবীর্যের পতনের ঘণ্টা বাজতে থাকে। রাজত্বের শেষ দিকে সেন রাজারা দুর্বল হয়ে পড়ে।
ত্রয়োদশ শতকের শুরুর দিকে দিল্লির দাস বংশের প্রতিষ্ঠাতা কুতুবউদ্দিন আইবেকের পরামর্শে বখতিয়ার খলজি লক্ষ্মণ সেনের বাংলা আক্রমণ করেন।
তুর্কি বংশের তেজস্বী ও সমরকুশলী বীর বখতিয়ার মাত্র ১৮ জন অশ্বারোহী নিয়ে আকস্মিকভাবে বাংলায় ঢুকে পড়েন।
এ সময় লক্ষ্মণ সেন মধ্যাহ্ন ভোজনে ব্যস্ত ছিলেন। সংবাদ পেয়ে লক্ষ্মণ সেন খালি পায়ে প্রাসাদের পিছনের দরজা দিয়ে পলায়ন করেন এবং নদীপথে পূর্ববাংলার বিক্রমপুরে আশ্রয় নেন।
লক্ষ্মণ সেনের সেনাবাহিনীও অপ্রস্তুত ছিল। তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বখতিয়ার খলজি দুর্বল সেনাদের পর্যুদস্ত করে বাংলা জয় করেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলায় বখতিয়ার খলজির আক্রমণ ছিল দক্ষিণ এশিয়ার মুসলমান আক্রমণের সূচনার মাইলফলক।
বখতিয়ার খলজির এ আক্রমণের ফলে বাংলায় দীর্ঘ দিনের সেন শাসনামলের পতন হয় এবং বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয় নতুন একটি শাসন পদ্ধতির। এ শাসন পদ্ধতির সৃষ্টিতে বখতিয়ার খলজির অবদান অপরিসীম ।