বল্লাল সেন কতটুকু শিক্ষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন লিখ
বল্লাল সেন কতটুকু শিক্ষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন লিখ |
বল্লাল সেন কতটুকু শিক্ষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন লিখ
- অথবা, বল্লাল সেন কতটুকু শিক্ষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন নিজের ভাষা লিখ ।
উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে সেন রাজা বল্লাল সেন এক বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছেন। যে কয়জন শাসক তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন তাদের মধ্যে বল্লাল সেনের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বল্লাল সেন ছিলেন বিদ্বান এবং বিদ্যোৎসাহী শাসক। তার সময়ে সমগ্র বাংলায় সেন বংশের আধিপত্য বিস্তৃত হয়েছিল।
নিম্নে প্রশ্নালোকে আলোচনা করা হলো :
→ শিক্ষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক : বল্লাল সেন নিজে ছিলেন একজন সুলেখক। তিনি ব্রতসাগর, প্রতিষ্ঠাসাগর, দানসাগর, আচারসাগর ও অঙ্গদসাগর নামে পাঁচটি গ্রন্থ রচনা করেন।
যার ফলে তিনি পণ্ডিত মহলে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। তবে তাঁর রচিত এসব গ্রন্থের মধ্যে ব্রতসাগর, আচারসাগর এবং প্রতিষ্ঠাসাগর এ তিনটি গ্রন্থ আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি।
তাঁর রচিত দানসাগর গ্রন্থের বিষয়বস্তু ছিল স্মৃতি, যা স্মৃতি বিষয়ক রচনা নামে পরিচিত এবং অদ্ভুতসাগর ছিল জ্যোতিষবিষয়ক রচনা।
তিনি ছিলেন বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী তার শিক্ষক ছিল অনিরুদ্ধ ভট্ট। বল্লাল সেন দানসাগর গ্রন্থের লেখা সমাপ্ত করলেও অদ্ভুতসাগর গ্রন্থের লেখা শেষ করে যেতে পারেননি, যা শেষ করেছিল তার পুত্র লক্ষ্মণ সেন।
তিনি তার শিক্ষকের কাছ থেকে বেদ, পুরাণ স্মৃতি প্রভৃতি শিক্ষা লাভ করেছিলেন। কথিত আছে যে, তার শাসন আমলে একটি বিরাট গ্রন্থালয় ছিল।
এছাড়াও তার রাজদরবার ছিল লেখক সাহিত্যিকদের লীলাভূমি। যার ফলে তার পুত্র লক্ষ্মণ সেনও পিতার মতো শিক্ষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বল্লাল সেন সিংহাসনে আরোহণ করে শাসনক্ষেত্রে বিশেষ পরিবর্তন সূচিত করেন যার ফলে তিনি প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।
রাজ্যবিস্তারমূলক কাজসহ অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে তিনি শিক্ষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা দান করে সেন শাসনামলকে এক বিশেষ পরিচয়ে পরিচিত করে তোলেন, যা প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে তার শাসন আমলকে মহিমান্বিত করে রেখেছে।