বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমণ ও লক্ষ্মণ সেনের পলায়ন বর্ণনা কর
বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমণ ও লক্ষ্মণ সেনের পলায়ন বর্ণনা কর |
বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমণ ও লক্ষ্মণ সেনের পলায়ন বর্ণনা কর
- অথবা, বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমণ লক্ষ্মণ সেনের পলায়ন সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : পাল সাম্রাজ্যের পতনের পর বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয় সেন সাম্রাজ্য। আর এই সেন সাম্রাজ্যের পতন ঘটান মুসলমান বীর সেনাপতি বখতিয়ার খলজি। তিনি বাংলায় প্রতিষ্ঠা করেন মুসলমান শাসনামল।
বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমণ করে জয় করা ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, যা বখতিয়ার খলজির বুদ্ধি মত্তা এবং লক্ষ্মণ সেনের দুর্বলতার বা নির্বুদ্ধিতা পরিচয় বহন করে।
বখতিয়ার খলজির বাংলা আক্রমণ : বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বখতিয়ার খলজি দিল্লির সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবেকের নিকট অনুমতি চান। তিনি এ অনুমতি নিয়ে ১২০৩ অথবা ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার উপরাজধানী নদীয়া আক্রমণ করেন।
তিনি নদীয়া আক্রমণে অসাধারণ কূটকৌশল অবলম্বন করে তিনি তেলিয়াগার্হির পথ পরিহার করে ঝাড় খণ্ডের অরণ্যের মধ্যে দিয়ে দুর্গম এ পথ দিয়ে হঠাৎ করে নদীয়া আক্রমণ করেন।
তিনি এত দ্রুত গতিতে অগ্রসর হয়েছিলেন যে তার সাথে মাত্র ১৮ জন অশ্বারোহী পৌঁছাতে পেরেছিল। তার মূল বাহিনী পশ্চাতে ছিল।
তিনি ঘোড়া ব্যবসায়ীর পরিচয় দিয়ে লক্ষ্মণ সেনের মূল রাজপ্রাসাদে ঢুকে অতর্কিতে হামলা চালান এবং পরে তার মূলবাহিনী প্রবেশ করে যুদ্ধক্ষেত্রে।
@ লক্ষ্মণ সেনের পলায়ন : বখতিয়ার খলজির আক্রমণে প্রাসাদের অভ্যন্তরে শোরগোল পড়ে যায়। এ সময় লক্ষ্মণ সেন মধ্যাহ্নভোজে ব্যস্ত ছিলেন। তাই তিনি কোনো প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ না পেয়ে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে যান।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বখতিয়ার খলজি ছিলেন একজন বীর মুসলিম যোদ্ধা। তার নিকট এবং তার বুদ্ধির নিকট লক্ষ্মণ সেন কিছুই না।
তাছাড়াও সে সময় লক্ষ্মণ সেন ছিল বৃদ্ধ তাই লক্ষ্মণ সেন মুসলিম আক্রমণ প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা না করে পালিয়ে গিয়ে প্রাণ বাঁচান। এর পরের বছর অর্থাৎ তিনি ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।