বিজয় সেনের ক্ষমতা লাভ সম্পর্কে আলোচনা কর
বিজয় সেনের ক্ষমতা লাভ সম্পর্কে আলোচনা কর |
বিজয় সেনের ক্ষমতা লাভ সম্পর্কে আলোচনা কর
- অথবা, বিজয় সেন কীভাবে ক্ষমতা লাভ করেন?
উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে বিজয় সেন এক অবস্মরণীয় নাম । তিনি পালবংশের শাসনের অবসান ঘটান এবং বাংলায় সেন বংশের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত করেন।
তিনি খুব সম্ভবত ১০৯৮ থেকে ১১৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশে রাজত্ব করেন। তিনি ছিলেন সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা।
→ বিজয় সেনের ক্ষমতা লাভ : বিজয় সেন খুব সম্ভবত পালরাজ রামপালের রাজত্বকালে রাঢ় অঞ্চলে প্রথম সামন্ত রাজা ছিলেন।
রামচরিতের বিবরণ ও কবি উমাপতিধরের প্রণীত দেওপাড়া প্রশস্তির ঊনবিংশ শ্লোক থেকে জানা যায় যে, পালরাজ রামপালকে বরেন্দ্র উদ্ধারে সাহায্য করেছিলেন বিজয় সেন।
এ সাহায্যের প্রতিদানে তিনি রাঢ়ে স্বাধীন ক্ষমতা লাভ করেন। শূরবংশীয় কন্যার সাথে বিজয় সেনের বিবাহ তাকে তার ক্ষমতা সম্প্রসারণে সাহায্য করেছিল।
দেওপাড়া প্রশস্তি থেকে জানা যায়, বিজয় সেন মিথিলার রাজা নান্যদেব কোটাটবীর রাজা বীরগুন, কৌশাম্বীর রাজা দ্বোরপবর্ধন, গৌড়ের রাজা মদনপাল, কামরূপে রাজা বৈদ্যদেব এবং সম্ভবত কলিঙ্গরাজ রাঘবকে যুদ্ধে পরাভূত করেছিলেন।
বিজয় সেনের একটি তাম্রশাসন থেকে জানা যায়, তিনি বঙ্গের বর্মরাজকে যুদ্ধে পরাজিত করে উক্ত অঞ্চল জয় করেছিলেন।
এভাবে বিজয় সেন তার সুদীর্ঘ ৬২ বছরের রাজত্বকালে বিবিধ যুদ্ধ জয়ে সমগ্র বাংলাকে এক অখণ্ডরাজ্য পরিণত করেছিলেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বিজয় সেন তার স্বীয় বুদ্ধি, চাতুর্য, কূটকৌশল ও সমর নৈপুণ্যে প্রায় সমগ্র বাংলাদেশ জয় করে সেন রাজ্যকে একটি বিস্তীর্ণ রাজ্যে পরিণত করেন।
এজন্য তিনি পরমেশ্বর, পরমমাহেশ্বর, পরমভট্টারক মহারাজধিরাজ, চোড়গঙ্গাময় প্রভৃতি উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি 'অরিরাজ-বৃষ্ণ-শঙ্কর গৌরবসূচক নামেও ভূষিত হন।