বাংলায় পর্তুগিজদের রাজনীতিক ও বাণিজ্যিক কার্যাবলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও
বাংলায় পর্তুগিজদের রাজনীতিক ও বাণিজ্যিক কার্যাবলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও |
বাংলায় পর্তুগিজদের রাজনীতিক ও বাণিজ্যিক কার্যাবলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও
- অথবা, পর্তুগিজদের রাজনীতিক ও বাণিজ্যিক কার্যাবলি লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : পর্তুগিজরা সর্বপ্রথম পিপলি নামক স্থানে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করে। তবে তারা গোয়ায় বাণিজ্যিক রাজধানী স্থাপনের মাধ্যমে বাংলায় প্রবেশের তৎপরতা চালায়।
এরপর ১৫৩৩ খ্রিষ্টাব্দে ডি.- মোলোকে চট্টগ্রাম বন্দরে অবতরণের অনুমতি প্রদান করা হলে বাংলায় তাদের রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের সূচনা হয়।
→ বাংলায় পর্তুগিজদের রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড : বাংলায় পর্তুগিজদের রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের বিবরণ নিম্নে তুলে ধরা হলো :
১. শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা : বাংলার হোসেন শাহী বংশের সুলতান গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহকে অবজ্ঞা করে পর্তুগিজরা প্রথম থেকেই শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা চালায়। ফলে সুলতান ক্ষুব্ধ হয়ে ডি. মোলোকে বন্দি করেন।
২. মাহমুদ শাহকে ডি. মোলোর সাহায্য প্রদান : ডি. মোলোর সাহায্যে মাহমুদ শাহ শেরখানের বিরুদ্ধে জয়লাভ করে এবং খুশি হয়ে মাহমুদ শাহ উপহারস্বরূপ ডি. মোলোকে উপযুক্ত পারিতোষিক প্রদানসহ চট্টগ্রাম ও সাতগাঁওয়ের প্রচুর জমি দান করে এবং বাণিজ্যকুঠি নির্মাণের অনুমতি প্রদান করেন।
৩. আকবরের শাসনামলে পর্তুগিজদের কর্মকাণ্ড : সম্রাট আকবর ভাগীরথী নদীর তীরে হুগলিতে পর্তুগিজদের বাণিজ্যকুঠি নির্মাণের অনুমতি প্রদান করেন। হুগলি পরবর্তীতে একটি সমৃদ্ধ শহর ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পরিণত হয়।
৪. সুবাদারি আমলে পর্তুগিজরা : সুবেদার শায়েস্তা খান আরাকানি মগদের বিরুদ্ধে পর্তুগিজদের দলে নেন। এছাড়া প্রতাপাদিত্য ও কেদার রায় নৌবাহিনীতে পর্তুগিজ গোলন্দাজ নিয়োগ করেছিলেন।
৫. পর্তুগিজদের অপতৎপরতা : জলদস্যু বা ফিরিঙ্গি সন্দ্বীপ দখল করে গ্রামে হানা দিয়ে স্বাস্থ্যবান যুবক, যুবতী, কিশোর-কিশোরীদের ধরে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি এবং জাহাজ লুণ্ঠন করতো।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পর্তুগিজরা ভারতবর্ষে ব্যবসা করতে এসে নিজেদের স্বার্থে কিছু নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের সাণে সাথে কিছু উন্নয়নমূলক কাজও করেছিল।