বাংলার ইতিহাসের উৎস হিসেবে কিতাবুল রেহালার ধারণা দাও
বাংলার ইতিহাসের উৎস হিসেবে কিতাবুল রেহালার ধারণা দাও |
বাংলার ইতিহাসের উৎস হিসেবে কিতাবুল রেহালার ধারণা দাও
- অথবা, ইতিহাসের উৎস হিসেবে 'কিতাবুল রেহালা সম্পর্কে কি জান? -লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : মধ্যযুগে ভারতবর্ষে অনেক বিদেশি পর্যটক এসেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হচ্ছেন ইবনে বতুতা। ইবনে বতুতা সুলতানি শাসনামলে বাংলায় আসেন।
তিনি বাংলা পরিভ্রমণ করে বাংলা সম্পর্কে চমকপ্রদ একটি গ্রন্থ রচনা করেন। এ গ্রন্থটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঐতিহাসিক উৎস।
যা থেকে আমরা তৎকালীন বাংলার অনেক না জানা তথ্য জানতে পারি। ফকরউদ্দিন মোবারক শাহের শাসনামলে তিনি বাংলায় আসেন।
→ ইবনে বতুতার রেহালা : ফকরউদ্দিন মোবারক শাহের শাসনামলে (১৩৪৫-১৩৪৬ খ্রি.) বাংলায় আসেন। ইবনে বতুতার ‘রেহালায়’ বাংলা সম্পর্কে যে স্বল্প বর্ণনা রেখে গেছেন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
তিনি এ গ্রন্থে ভারত সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্যের সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন। সমকালীন ভারতের রাজনৈতিক, সামরিক, আইন ও বিচারব্যবস্থা এবং সমাজ সংস্কৃতির নানা দিকও তুলে ধরেছেন।
অনেক ছোট-খাটো বিষয়ও তার দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। যেমন : সমকালীন ভারতের ডাক, সড়ক ব্যবস্থা, গুপ্তচর প্রথা,সমকালীন মানুষের চিন্তাভাবনা, কৃষিপণ্য, রাজদরবারের বিভিন্ন উৎসব, বাণিজ্য, নৌ-ব্যবস্থা, সঙ্গীত প্রভৃতি বিষয়কে তিনি সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন।
তার ভ্রমণবৃত্তান্তে সুলতান মুহম্মদ বিন তুঘলকের শাসনকালের নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। বৈপরীত্যে ভরা একটি আকর্ষণীয় চরিত্রের অধিকারী সুলতান মুহম্মদ বিন তুঘলক এর চরিত্র ও কৃতিত্ব সম্পর্কে এত নিখুঁত বিবরণ অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইবনে বতুতা তার ভ্রমণ বৃত্তান্তে বাংলা সম্পর্কে যে গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান তথ্যসমূহ উল্লেখ করেছেন তার ঐতিহাসিক মূল্যমান অনেক।
সমসাময়িক অন্য কোন সূত্রে বা এ ধরনের তথ্যের অভাব ইবনে বতুতার সংক্ষিপ্ত বিবরণকে মূল্যবান করে তুলেছে।
১৩৪৬ সালে তিনি আরও কিছু দেশ ভ্রমণ করে বাংলা থেকে একটি জাহাজ যোগে সুমাত্রা ও জাভা হয়ে চীনে ফিরে যান। এ গ্রন্থে বাংলা সম্পর্কে তিনি প্রচুর তথ্যের সন্নিবেশ ঘটান ।