স্থাপত্য শিল্পে ফাতেমীয়দের অবদান আলোচনা কর
স্থাপত্য শিল্পে ফাতেমীয়দের অবদান আলোচনা কর
- অথবা, স্থাপত্য শিল্পে ফাতেমীয়দের অবদান লিখ ।
উত্তর : ভূমিকা : স্থাপত্য শিল্পে ফাতেমীয় শাসকদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তারা স্থাপত্য শিল্পে উদার পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেন। ফলে ফাতেমীয় আমলে স্থাপত্য শিল্পের ব্যাপক বিকাশ লাভ করে।
প্রথম দিকের ফাতেমীয় খলিফাগণ এবং পরবর্তী পর্যায়ের উজিরদের আমলে স্থাপত্য শিল্পের যে বিশাল উন্নতি সাধিত হয়, তা শুধু মিশরের ফারাও যুগের স্থাপত্যের সমৃদ্ধির সাথে তুলনা করা চলে ।
স্থাপত্য শিল্পে ফাতেমীয়দের অবদান : স্থাপত্য শিল্পে ফাতেমীয়দের ছিল উদার পৃষ্ঠপোষকতা। আর এ উদার পৃষ্ঠপোষকতার কারণে ফাতেমীয় আমলের অনেক উন্নতি লাভ করে।
আর বিনিময়ে স্থপতিগণ কায়রোকে সুন্দর সুন্দর অট্টালিকা দ্বারা সুসজ্জিত করেন। এই সকল অট্টালিকার মধ্যে খলিফা আল মুইজ কর্তৃক নির্মিত 'কমর উল বাহার' এবং ‘কসর উল মহজি’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আল আজহার মসজিদ ফাতেমীয় স্থাপত্য যুগের আর একটি নিদর্শন। মিসরের মুসলমানরা পারস্যের অশ্বনলা কৃত্রিম খিলানের উদ্ভব এবং এর উৎকর্ষ সাধন করেন।
নকশা নির্মাণ পদ্ধতি ও খিলানের ব্যবহার প্রভৃতি ব্যাপারে আল- আজহার মসজিদে মোটামুটি ইবনে তুলুনের মসজিদের আদর্শ অনুসৃত হয়েছে।
কাজেই এটি মিশরীয়দের দেশি রুচির বিকাশ। ফাতেমীয়দের সবচেয়ে অভিনব প্রবর্তন হলো stalactite pendentive বা নিভৃত কোণের উপর দোদুল্যমান চন্দ্রের চূড়া গঠনকারী খিলান।
আল হাকিমের মসজিদের গম্বুজের অভ্যন্তরে এটি সাধারণত দেখতে পাওয়া যায়। ১১২৫ সালে নির্মিত আল আকসা মসজিদে এবং ১১৬০ সালে নির্মিত সালিহ ইবনে রুজজিদের মসজিদে কুস্যিক লিপি ও স্পষ্ট ডিজাইন দৃষ্ট হয়।
ফাতেমীয় শিল্প এজন্যই বিখ্যাত। অন্যভ্যস্ত, অসভ্য নাইটরাও ফাতেমীয়দের বিচিত্র্য স্থাপত্য শিল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ফাতেমীয় শাসনামলে মুসলিম স্থাপত্য ব্যাপক বিকাশ লাভ করে। তাঁদের উদার পৃষ্ঠপোষকতার কারণে এ সময় জাগতিক ইমারত ছাড়াও মসজিদ স্থাপত্যের প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়। ফাতেমীয় আমলের অন্যতম স্থাপত্যের নিদর্শন হলো আল-আজহার মসজিদ ।