সিপাহী বিদ্রোহের সামরিক কারণ গুলো আলোচনা কর


সিপাহী বিদ্রোহের সামরিক কারণ গুলো আলোচনা কর
সিপাহী বিদ্রোহের সামরিক কারণ গুলো আলোচনা কর

সিপাহী বিদ্রোহের সামরিক কারণ গুলো আলোচনা কর

  • অথবা, সিপাহি বিদ্রোহের সামরিক কারণ বর্ণনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহ ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। ব্রিটিশ অধীনস্থ কোম্পানির সরকার কর্তৃক এদেশের কৃষক শ্রমিক থেকে দরিদ্র জনগোষ্ঠী যখন চরম নির্যাতনের সম্মুখীন তখন সিপাহিগণ প্রথম এ বিদ্রোহের সূচনা ঘটান। 

পরবর্তীতে অন্যান্য জনগণ এতে অংশ নেন। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় নানা কারণে এ বিদ্রোহ সংঘটিত হয় ৷

→ সিপাহি বিদ্রোহের সামরিক কারণ : রাজনৈতিক সামাজিক অর্থনৈতিক ধর্মীয় কারণের পাশাপাশি সামরিক কারণও ছিল নিম্নে সিপাহি বিদ্রোহের সামরিক কারণগুলো তুলে ধরা হলো :

১. দেশীয় সিপাহিদের অসন্তোষ : ইংরেজদের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে দেশীয় সিপাহিদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। যার অনিবার্য রূপ পরিগ্রহ করে ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের মাধ্যমে। কিন্তু এই সিপাহিদেরই নির্ভেজাল আনুগত্যের ফলে এক সময় কোম্পানি ভারতবর্ষ জয় করতে পেরেছিল ।

২. বর্ণবৈষম্য : ইংরেজ কর্তৃক এ দেশের সিপাহিরা বর্ণবাদের শিকার ছিলেন, শ্বেতাঙ্গ সৈন্যদের তুলনায় তাদের বেতনের স্বল্পতা অসন্তোষ আরো বাড়িয়ে দেয়। 

৩ লক্ষ ১৫ হাজার ৫০০ ভারতীয় সৈনিকের জন্য কোম্পানির সরকার বছরে ব্যয় করতো ৯৮ লাখ পাউন্ড। অন্যদিকে মাত্র ৫১ হাজার ৩১৬ জন ইউরোপীয় অফিসার ও সৈনিকের পেছনে খরচ হতো ৫৬ লাখ ৬০ হাজার পাউন্ড ।

৩. পদোন্নতিতে বাধা : সামরিক বাহিনীতে দেশীয় সৈন্যদের নিকৃষ্ট শ্রেণির জীব বলে গণ্য করা হতো। তাদেরকে “নিগার”, “শুয়োর” ইত্যাদি বলে গালিগালাজ করা হতো। ভারতীয় হওয়ার কারণে তাদের প্রতি এমন বৈষম্যমূলক আচরণ সিপাহিদের পক্ষে দুঃসহ হয়ে উঠেছিল।

৪. সৈন্যদের ধর্মবিরুদ্ধ কাজে বাধ্য : ভারতীয় সৈন্যদেরকে নানাভাবে তাদের ধর্মবিরুদ্ধ বিভিন্ন কাজে বাধ্য করা হতো। সিপাহিদের কপালে তিলক কাটা নিষিদ্ধকরণ, দাড়ি কামানো এবং পুরনো পাগড়ীর বদলে প্রতীক বিশেষ চামড়ার পাগড়ী গ্রহণ ইত্যাদি ব্যবস্থার প্রবর্তন ভারতীয় সিপাহিদের মনকে বিক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত করে তোলে ৷

৫: কার্তুজের ব্যবহার : ১৮৫৭ সালের জানুয়ারি মাসে গুজব রটল যে, এনফিল্ড রাইফেলের কার্তুজের মধ্যে গরু ও শূকরের চর্বি মাখানো আছে। এ কার্তুজ দাঁত দিয়ে কেটে বন্দুকে পুরাতে হতো। 

সিপাহিরা এই কার্তুজের পরিকল্পিতভাবে ধর্ম নষ্ট করার প্রয়াস বলে মনে করে এবং কার্তুজের ব্যবহারে অসম্মতি জানায়। ইংরেজরা তা না মানলে বিরোধ অনিবার্য হয়। ফলে বিদ্রোহ অনিবার্য হয়ে পড়ে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইংরেজদের পক্ষ থেকে কার্তুজে শূকর ও গরুর চর্বির বিষয়টিকে ভ্রান্ত প্রমাণ করতে চাইলেও উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে।

 ১৮৫৭ সালের ২৯ মার্চ ব্যারাকপুর সেনানিবাসের মঙ্গলপান্ডে নামে জনৈক সিপাহি জ্বলে । উঠে। এছাড়া সামরিক ও বিভিন্ন কারণ এ বিদ্রোহের মূলে নিহিত ছিল ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ