সিপাহী বিদ্রোহকে মহাবিদ্রোহ বলা হয় কেন
সিপাহী বিদ্রোহকে মহাবিদ্রোহ বলা হয় কেন |
সিপাহী বিদ্রোহকে মহাবিদ্রোহ বলা হয় কেন
- অথবা, সিপাহি বিদ্রোহকে মহাবিদ্রোহ বলার কারণ সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : দীর্ঘ এক শতকাল পর্যন্ত এদেশের মানুষ কোম্পানির সরকার কর্তৃক নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছিল। নির্যাতনের মাত্রা যখন চরমে তখন দেয়ালে পিঠ লেগে এদেশের কৃষক-শ্রমিকরা মারাত্মকভাবে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
পরাধীনতার ১০০ বছর পর স্বাধীনতা ঘোষণা করে এদেশের সৈনিকরা ও দেশীয় রাজাকাররা পরবর্তীতে স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণ সমাজ।
→ সিপাহি বিদ্রোহকে মহাবিদ্রোহ বলার কারণ : ইংরেজরা প্রায় ২০০ বছর ধরে এদেশের মানুষের উপর শাসনকার্য পরিচালনা করেছে। আঠার শতকের শেষের থেকে এবং উনিশ শতকের শুরুর দিকে কোম্পানির সরকার এদেশের মানুষের উপর চরম নির্যাতন চালায়।
এর প্রেক্ষিতে কৃষকরা কোম্পানির সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলে। যা পরবর্তীতে মহাবিদ্রোহে রূপ নেয়। যার ফলশ্রুতিতে এ বিদ্রোহকে মহাবিদ্রোহ হিসেবে গণ্য করা হয়।
অন্যভাবে বলা যায়, এই বিদ্রোহ ব্রিটিশ শাসনকে প্রায় বসিয়ে দিয়েছিল । সিপাহি বিদ্রোহ কোম্পানির ভারতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে সূত্রপাত হলেও অল্পদিনের মধ্যে তা ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পরিব্যাপ্ত হয়।
প্রায় এক বছর ধরে লক্ষ লক্ষ কৃষক, শ্রমিক এবং সিপাহিরা সাহসের সঙ্গে ইংরেজদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়েছিল ।
তাদের সাহসিকতা এবং আত্মবিসর্জন ভারতের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সূচনা ঘটায়। যার কারণে এটিকে মহাবিদ্রোহ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
এছাড়াও বলা যায় যে, সিপাহি বিদ্রোহ বা সংগ্রামের পরিপ্রেক্ষিতেই জনগণ সচেতন হয়ে উঠে এবং নানা আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ সালে ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটায়। যার কারণে একে মহাবিদ্রোহ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ ভারতে ব্রিটিশ শাসনে চরমভাবে নাড়া দিয়েছিল। প্রায় এক শতাব্দীকাল পর্যন্ত কোম্পানির সরকারের শাসন শোষণ নির্যাতন আর বৈষ্যম্যের শিকার হয়ে কৃষক শ্রমিকরা এ আন্দোলন গড়ে তোলে যা পরবর্তীতে মহাবিদ্রোহে রূপ নেয় ।