সিপাহী বিদ্রোহের কারণ গুলি কি কি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সিপাহী বিদ্রোহের কারণ গুলি কি কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সিপাহী বিদ্রোহের কারণ গুলি কি কি। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।.
সিপাহী বিদ্রোহের কারণ গুলি কি কি |
সিপাহী বিদ্রোহের কারণ গুলি কি কি
- অথবা, সিপাহি বিদ্ৰোহ কেন সংঘটিত হয়েছে লিখ ।
- অথবা, সিপাহি বিদ্রোহের কারণগুলো সংক্ষেপে লিখ ।
উত্তর : ভূমিকা : ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ আধুনিক ভারতের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই মহাবিদ্রোহ ভারতে ব্রিটিশ শাসনকে ভাসিয়ে দিতে বসেছিল।
এ বিদ্রোহ কোম্পানির ভারতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে সূত্রপাত হলেও অল্পদিনের মধ্যে ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পরিব্যাপ্ত হয়। প্রায় এক বছর লক্ষ কৃষক, শ্রমিক এবং সিপাহিরা সাহসের সঙ্গে ইংরেজদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়েছিল।
→ সিপাহি বিদ্রোহের কারণ : ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের পেছনে যেসব কারণ দায়ী ছিল সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো :
১. রাজনৈতিক কারণ : পলাশির যুদ্ধের পর থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজ্যবিস্তার একের পর এক দেশীয় রাজ্যগুলো নানা অজুহাতে দখল, দেশীয় রাজন্যবর্গের মধ্যে ভীতি, অসন্তোষ, তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়, অপশাসনের অজুহাতে অযোধ্যা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করা হয়।
এসব ঘটনায় দেশীয় রাজন্যবর্গ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন। তাছাড়া ডালহৌসি কর্তৃক দিল্লির সম্রাট পদ বিলুপ্ত করায় সম্রাট পদ থেকে বঞ্চিত দ্বিতীয় বাহাদুর শাহও ক্ষুব্ধ হন। ফলে সিপাহিগণ বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
২. অর্থনৈতিক কারণ : ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল ইংরেজ সরকারের অর্থনৈতিক নীতির ফলে জনসাধারণের অসন্তোষ ও ক্ষোভ।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে শুরু হয় চরম অর্থনৈতিক শোষণ ও বঞ্চনা । কোম্পানি ক্ষমতার দখলের আগে ও পরে এদেশের শিল্পকে ধ্বংস করে ও কৃষকদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডকে ভেঙ্গে দেয়।
দরিদ্র কৃষকদের উপর অতিরিক্ত কর ধার্য করার ফলে কৃষকরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে। অর্থনৈতিকভাবে নানা অবস্থার শিকার সাধারণ মানুষ কোম্পানি শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
৩. সামাজিক কারণ : আঠারো শতকের শেষ ভাগে এবং উনিশ শতকের প্রথমার্ধে পাশ্চাত্যের প্রভাব, কোম্পানির সমাজ সংস্কার জনকল্যাণমূলক হলেও গোটা রক্ষণশীল হিন্দু-মুসলমান এসব মেনে নিতে পারেনি।
ইংরেজি শিক্ষা, সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ, হিন্দু বিধবাদের পুনরায় বিবাহ প্রভৃতি সামাজিক রীতিনীতির বিভিন্নভাবে সংস্কারের ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। ফলে তারা বিদ্রোহ গড়ে তোলে।
৪. ধর্মীয় কারণ : আঠারো শতকের শেষভাগে ও উনিশ শতকের শুরুর দিকে পাশ্চাত্যের প্রভাব, কোম্পানির সমাজ সংস্কার জনকল্যাণমূলক হলেও গোটা রক্ষণশীল হিন্দু-মুসলমান এসব মেনে নিতে পারেনি।
খ্রিষ্টান ধর্মযাজকদের ধর্মপ্রচার ইত্যাদির ফলে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের গোঁড়াপন্থিরা শঙ্কিত হয়ে সিপাহি বিদ্রোহ গড়ে তোলেন ।
৫. সামরিক কারণ : ইংরেজ সৈন্য ও ভারতীয় সিপাহিদের মধ্যে পদবি, বেতন-ভাতার মধ্যে বিরাট বৈষম্য ছিল। ভারতীয়দের সুযোগ- সুবিধা কম ছিল।
তাছাড়া পদোন্নতির সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত ছিল । তার উপর ব্রিটিশ অফিসারদের পক্ষপাতিত্ব, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ সিপাহিদের মধ্যে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৮৫৭ সালের ব্রিটিশ কোম্পানিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যদের আন্দোলন ভারতে ব্রিটিশ শাসনের ভিতে আঘাত হেনেছিল।
এটি শুধুমাত্র যে, সৈন্যদের অসন্তোষের ভিত্তিতে হয়েছিল তা নয়। এটির মূল কারণ কোম্পানির অসন্তুষ্ট বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ৷
রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়, সামরিকসহ নানা কারণে সিপাহিদের এ বিদ্রোহ গড়ে ওঠে, যার ব্যাপ্তি ছিল প্রায় এক শতককাল পর্যন্ত ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সিপাহী বিদ্রোহের কারণ গুলি কি কি
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সিপাহী বিদ্রোহের কারণ গুলি কি কি । যদি তোমাদের আজকের সিপাহী বিদ্রোহের কারণ গুলি কি কি পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।