সেলজুক যুগের বিখ্যাত প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যা জান লেখ
সেলজুক যুগের বিখ্যাত প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যা জান লেখ |
সেলজুক যুগের বিখ্যাত প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যা জান লেখ
- অথবা, নিজামুল মূলক সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
- অথবা, টীকা লিখ : নিজামুল মূলক তুলী ।
উত্তর : ভূমিকা : যে কয়জন মহৎ ব্যক্তি কোন রাজবংশ জন্মগ্রহণ না করেও নিজ কর্মদক্ষতা দ্বারা ইতিহাসে স্থায়ী শাসন লাভ করেছেন; তন্মধ্যে নিজামূলক মূলক বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার দরুনই মালিক শাহের রাজত্বকালে তিনি ইতিহাসে মহিমান্বিত ও চিরস্থায়ী হয়ে আছেন। এ সময় তিনিই ছিলেন রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তা।
ঐতিহাসিক পি. কে. হিট্রি ইসলামের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম অলঙ্কার বলে প্রশংসা করেন (Ref. History of the Arabs).
নিম্নে তার পরিচয় ও কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হলো :
নিযামুল মুলকের পরিচয় : নিযামুল মুলকের প্রকৃত নাম খাজা আবু আলী আল হাসান। তিনি ১০১৮ খ্রি. পারস্যের তুঘ নগরীর অদূরবর্তী রাদকাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তার পিতার নাম আল আলী। নিজামুল মূলক প্রথমে সুলতান মাহমুদের অধীনে চাকরি গ্রহণ করেন এবং গজনবীদের পতন ঘটলে তিনি সেলজুকদের অধীনে চাকরি নেন।
প্রধানমন্ত্রীর পদ অলংকার ১০৪০ খ্রিস্টাব্দে তুমি লবেগ সুলতান মাহমুদকে পরাজিত করে গৌড় রাজ্য অধিকার করেন। তিনি নিজামুলকে স্বীয় কীর্তির নিযুক্ত করেন।
অতঃপর তুমিল বেগ এর মৃত্যুর পর তার পুত্র আলপ আরসালানের আমলে নিজামুল প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হন। এ সময় তিনি বিখ্যাত উপাধি নিজামুল মূলক এবং আতাবেগ ধারণ করেন।
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ : আলপ আরসানামের মৃত্যুর পর তদীয়পুত্র মালিক শাহ সেলজুক সিংহাসনে আরোহণ করেন। এ সময় থেকে নিজামুল মুলকের গৌরবময় জীবন শুরু হয়। তিনি বাহ্যিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হলেও সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হন।
শিক্ষার পৃষ্ঠপাষকতা : নিজামুল মূলক শিক্ষার অগ্রগতিতে এক অভূতপূর্ব অবদান রেখেছেন। তিনি অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মক্তব প্রতিষ্ঠা করেন।
তন্মধ্যে বাগদাদের নিজামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ বিদ্যাপীঠ ।
রাজনৈতিক সংস্কার : নিজামুল মুলকের বহুবিদ কর্মের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কর্ম হচ্ছে সিয়াসতনা। এই রাজনৈতিক সংস্কারের এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন পরিমণ্ডিত হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রী নিজামুল মূলক এক অসাধারণ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। ইয়াহিয়া বার্মেকী পর তিনিই ছিলেন এশিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক।