সেলজুক বংশের অভ্যুদয় সম্পর্কে লিখ
সেলজুক বংশের অভ্যুদয় সম্পর্কে লিখ |
সেলজুক বংশের অভ্যুদয় সম্পর্কে লিখ
- অথবা, সেলজুকদের উত্থান সম্পর্কিত একটি টীকা লিখ ।
- অথবা, সেলজুকদের উত্থান সম্পর্কে লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয়দের শাসনামলে বুয়াইয়াদের ধ্বংসস্তূপে প্রতিষ্ঠিত সেলজুক বংশ ব্যাপক ক্ষমতাধর ছিল। এশিয়া মাইনরে তুর্কী সেলজুকরাই সর্বপ্রথম ইসলামি শাসনব্যবস্থা কায়েম করেন।
ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে সেলজুকদের অবদান অতুলনীয়। সেলজুক নামক একজন পূর্বপুরুষের নামানুসারে তারা সেলজুক বংশ বা সেলজুক রাজশক্তি কায়েম করে।
→ সেলজুকদের উত্থান : নিচে সেলজুকদের উত্থানের ঘটনা তুলে ধরা হলো :
১. সেলজুকদের অবস্থান : সেলজুকদের আদি বাসস্থান ছিল। মধ্য এশিয়ায় । প্রকৃতপক্ষে কিরগিজ অঞ্চলে ঘুজ বংশোদ্ভূত তুর্কী উপজাতি হলো সেলজুক।
২. নামকরণ : সেলজুক বিন বাকায়িক ছিলেন তুর্কী জাতির ঘুজদের প্রধান। এ গোত্রীয় প্রধান সেলজুক বাকায়িকের নামানুসারে সেলজুক বংশ পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীকালে এরাই ১০৩৭ - ১১৯৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল।
৩. সেলজুকদের আগমন : সেলজুকদের অগণিত দুর্ধর্ষ সৈন্য ছিল। গজনীর সুলতান মাহমুদ জীবিতকালে উহাদের সম্পর্কে সতর্ক ছিলেন এবং নিজ দূরদর্শিতায় তাদেরকে এড়িয়ে চলতেন, যখন সুলতান মাহমুদ পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন।
তখন তুর্কীদের একটি বৃহৎ অংশ তুর্কীস্থানের কিরগিজ উপত্যকা থেকে এসে দক্ষিণ ট্রান্স অক্সিয়ানায় বুখারা অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন ।
৪. সেলজুকদের কার্যকলাপ : সেলজুকরা কিরগিজ উপত্যকাতে এসে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে এবং সুন্নি মতবাদের বিশ্বাসী হয়। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে গজনী রাজ্যে তাদের প্রভূত্ব বহুলাংশে প্রতিষ্ঠা করে এবং রাজ্যের শাসননীতির আমূল পরিবর্তনের প্রচেষ্টা চালান ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সেলজুক জাতিগোষ্ঠী ছিল একটি সাহসী জাতি। তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রাখে।
গজনীর সুলতান মাহমুদের সময় করদান ও বশ্যতা স্বীকারের মাধ্যমে কিরগিজ অঞ্চলে বসবাস করার সুযোগ লাভ করে।
সুলতান মাহমুদের মৃত্যুর পরই মূলত দুর্বল শাসকদের আমলে ১০৩৭ খ্রিস্টাব্দে সেলজুকরা শাসন ক্ষমতায় আরোহণ করে ।