শশাঙ্ক কিভাবে গৌড়ের ক্ষমতা দখল করেন । শশাঙ্ক কিভাবে ক্ষমতায় আসেন
শশাঙ্ক কিভাবে গৌড়ের ক্ষমতা দখল করেন । শশাঙ্ক কিভাবে ক্ষমতায় আসেন |
শশাঙ্ক কিভাবে গৌড়ের ক্ষমতা দখল করেন । শশাঙ্ক কিভাবে ক্ষমতায় আসেন
- অথবা, শশাঙ্ক কিভাবে ক্ষমতায় আরোহণ করেন?
- অথবা, শশাঙ্কের ক্ষমতারোহণ সম্পর্কে যা জান লেখ।
উত্তর : ভূমিকা : সপ্তম শতকে বাংলার ইতিহাসে গৌড়রাজ শশাঙ্ক হঠাৎ উল্কাপিণ্ডের মতো উদয় হয়ে কিছুকাল আপন কৃতিত্বের দ্বারা সমকালীন ইতিহাসে আলো ছড়ান । তার সিংহাসন লাভ ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা।
নিচে শশাঙ্কের সিংহাসন আরোহণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
→ শশাঙ্কের গৌড়ের ক্ষমতা দখল : শশাঙ্ক কখন এবং কিভাবে গৌড়ের ক্ষমতা দখল করেন তা সঠিকভাবে জানা যায় না। এ সম্পর্কে বিভিন্ন মতপার্থক্য রয়েছে।
এ সম্পর্কে জানার জন্য নির্ভর করতে হয় বানভট্টের হর্ষচরিত, হিউয়েন সাং এর বিবরণ, হর্ষবর্ধনের শিলালিপি, হর্ষচরিতের টীকাকার শংকরের বিবরণী, রোহিতাশ্বরের লিপি ও আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প ইত্যাদির উপর।
তবে একথা স্পষ্ট যে, কনৌজের মৌখ রাজবংশের সাথে পরবর্তী গুপ্ত বংশীয় রাজাগণের পুরুষানুক্রমিক বিবাদ,চালুক্যরাজ কীর্তিবর্মার আক্রমণ এবং তিব্বতীয় রাজা শংসান এর আক্রমণের ফলে ৬ষ্ঠ শতাব্দীর শেষদিকে গৌড়ের পরবর্তী গুপ্তরাজাগণ অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে।
এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে শশাঙ্ক ৭ম শতকের প্রারম্ভে কোনো এক সময়ে (আনুমানিক ৬০৬ খ্রিষ্টাব্দে) গৌড়ে এক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ৬০৬ খ্রিষ্টাব্দের কোনো একসময় গৌড়ে ক্ষমতাসীন হন।
→ শশাঙ্কের রাজধানী : তার রাজধানী ছিল বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের ছয় মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত রাঙ্গামাটি। শশাঙ্কের সময়ে তার গৌড়ের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ।
হিউয়েন সাং-এর মতে, তার রাজধানী কর্ণসুবর্ণ মৃত্তিকা বিহারে ছিল। তিনি গৌড়ে সার্বভৌম গৌড় রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করে ‘গৌড়েশ্বর' উপাধি ধারণ করে সিংহাসনে বসেন।
সিংহাসনে আরোহণ করার পর তিনি রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনি এক বিশাল সম্রাজ্যের অধিপতি হতে পেরেছিলেন। তার রাজ্যসীমা বহুদূর পর্যন্ত হয়েছিল।
→ শশাঙ্কের রাজ্যসীমা : বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলা বহরমপুরের ছয় মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত রাঙ্গামাটি এবং বাংলার উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমাংশ শশাঙ্কের সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল। শশাঙ্কের রাজত্বের প্রথম থেকেই মগধ তার সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল ।
উপসংহার : পরিশেষে এ কথা বলা যায় যে, বাংলার প্রাচীন ইতিহাসে শশাঙ্কের নামটি একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী নাম, একটি বিশ্বাস, একটি চেতনা। তিনি তার অসামান্য যোগ্যতার দ্বারা গৌড়ের ক্ষমতা দখল করেছিলেন।