শশাঙ্ক বৌদ্ধ নির্যাতনকারী ছিলেন এ মর্মে তোমার মতামত লিখ
শশাঙ্ক বৌদ্ধ নির্যাতনকারী ছিলেন এ মর্মে তোমার মতামত লিখ |
শশাঙ্ক বৌদ্ধ নির্যাতনকারী ছিলেন এ মর্মে তোমার মতামত লিখ
- অথবা, শশাঙ্ক কি বৌদ্ধধর্ম বিদ্বেষী ছিলেন?
উত্তর : ভূমিকা : বাংলাদেশ ও বাঙালির ইতিহাসে শশাঙ্ক একটি উল্কাপিণ্ডের নাম। যার উদয় হয়েছিল সাম্রাজ্য জয় করার জন্য এবং কিছুকাল গৌড়ে নিজকর্ম দক্ষতা বলে গৌরবের সহিত শাসন কার্য পরিচালনা করার পর ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
সমসাময়িক লেখকদের বর্ণনাতে শশাঙ্কের বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি বিদ্বেষর কথা শোনা যায়। যদিও এ সম্পর্কে রয়েছে ব্যাপক মত পার্থক্য। তবে হয়তো বা শশাঙ্ক কিছুটা হলেও বৌদ্ধ বিদ্বেষী ছিলেন।
শশাঙ্কের বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি বিষেষ সম্পর্কে মতামত : নিচে শশাঙ্কের বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ সম্পর্কে মতামত সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :
১. শশাঙ্কের সময় বাংলা তথা আসামের সব জায়গাতেই ব্রাহ্মণ্য ধর্ম ও সংস্কৃতি ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে। তাই কোনো কোনো রাজবংশের মধ্যে ব্রাহ্মণ্য ধর্ম বিস্তার লাভ করে।
২. শশাঙ্কের প্রধান শত্রু হর্ষবর্ধন ছিলেন বৌদ্ধধর্মের সমর্থক। তাই শশাঙ্ক বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি বিদ্বষী থাকবেন এটা অস্বাভাবিক নয়।
৩. ব্যবসা-বাণিজ্যে বৌদ্ধদের এসময় একচেটিয়া অধিকার ছিল। শশাঙ্ক অর্থনৈতিক কারণে হয়তোবা বৌদ্ধ বিদ্বেষ দেখিয়েছিলেন
৪. বৌদ্ধধর্ম ও সংস্কৃতি সমৃদ্ধ ও বর্ধিষ্ণু অবস্থা ব্রাহ্মণ্য ধর্মাবলম্বী রাজা হয়তোবা পছন্দ করতেন না।
৫. হিউয়েন সাং ও বানভট্টের লিখিত ইতিহাসের উপর পুরোপুরি বিশ্বাস করে তাকে বৌদ্ধ বিশেষী বলা যুক্তিযুক্ত নয়।
৬. হিউয়েন সাং তার লেখায় এ সময় লেখেন যে, শশাঙ্কের রাজধানী গৌড়সহ বাংলার বাইরেও বৌদ্ধধর্মের প্রসার বৃদ্ধি পেয়েছিল। সুতরাং এ থেকে শশাঙ্কের বৌদ্ধ বিদ্বেষের কথা বলা যায় না।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলার ইতিহাসে শশাঙ্ক এক বিশেষ নাম অধিকার করে আছে। তবে একথা ও সত্য যে শশাঙ্ক বৌদ্ধধর্মের বিদ্বেষী হলে পাঁচশত বছর পরও তা কিংবদন্তী হয়ে বেঁচে থাকতো না।
তবে নিছক ধর্মীয় গোড়ামীর - বশে শশাঙ্ক বৌদ্ধ নির্যাতন করেছেন এ কথা বলা যায় না। মনে করা হয় যে, এর পেছনে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণ আছে।
কারণ এ সময় ব্যবসা-বাণিজ্যে বৌদ্ধধর্মের ব্যাপক প্রভাব ছিল তাই তিনি এজন্যও বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি বিদ্বেষী হতে পারেন।