শশাঙ্কের মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল। শশাঙ্কের জীবনাবসান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত কর
শশাঙ্কের মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল। শশাঙ্কের জীবনাবসান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত কর |
শশাঙ্কের মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল। শশাঙ্কের জীবনাবসান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত কর
উত্তর : ভূমিকা : মহারাজাধিরাজ শশাঙ্ক একজন মহাসামন্ত রূপে জীবন শুরু করেন এবং তিনি তার স্বল্প সময়কাল পরেই ৬০৬ খ্রিষ্টাব্দে গৌড়ের সিংহাসনে বসেন। সপ্তম শতকে শশাঙ্কের আগমন হয়েছিল বাংলার আকাশে এক ঝড়ো হাওয়ার মতো।
বেশ কিছুদিন আপন কৃতিত্ববলে বাংলা শাসন করার পরকালের স্রোতে এ মহান পুরুষ আবার পৃথিবী থেকে হারিয়ে যান। শশাঙ্কের মৃত্যু নিয়ে ঐতিহাসিক সনাতনের পার্থক্য আছে।
→ শশাঙ্কের মৃত্যু : শশাঙ্কের মৃত্যু নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। তাছাড়া শশাঙ্ক কত বছর ধরে রাজত্ব করেছিলেন সে সম্পর্কেও জানা যায় নি।
৬১৯ খ্রিষ্টাব্দে উৎকীর্ণ গগ্রাম তাম্রশাসন থেকে জানা যায় যে, শশাঙ্ক ৬১৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন।
চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং -এর বিবরণীতে পাওয়া যায় যে, ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দের কিছুকাল আগে শশাঙ্ক গয়ার বোধিবৃক্ষ ছেদন করেছিলেন এবং নিকটাবর্তী মন্দির থেকে বৌদ্ধ মন্দির সরিয়ে এনেছিলেন।
আর এ জন্যই শশাঙ্কের সারা শরীরে ক্ষত সৃষ্টি হয়। শরীরের মাংস পঁচে যায় এবং অল্পকাল পরেই শশাঙ্কের মৃত্যু হয়।
তবে হিউয়েন সাং -এর এ উক্তি সঠিক কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে এ উক্তি থেকে অনুধাবন করা সম্ভব হয় যে, ৬০৬ থেকে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত, শশাঙ্ক ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। এবং অল্পকাল পরে অর্থাৎ ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দের অল্পকাল আগে শশাঙ্ক মৃত্যুবরণ করেন।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একথা বলা যায় যে প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে শশাঙ্কের উত্থান ছিল একটা স্বার্থক ঘটনা এবং শশাঙ্ক ছিল স্বার্থক ব্যক্তি নীহাররঞ্জন রায় তার “বাঙালির ইতিহাস” গ্রন্থে শশাঙ্কের উত্থান সম্পর্কে বলেছেন যে, “অজ্ঞাত কুলশীল মাহসামন্তরূপে জীবন আরম্ভ করে তদানীন্তন উত্তর ভারতের সর্বোত্তম রাষ্ট্রসমূহের সমবেত শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র স্বাধীন নরপতিরূপে সুবিস্তৃত রাজ্যের অধিকারী হয়েছিলেন।
এ তথ্যই ঐতিহাসিকদের প্রশংসিত বিস্ময় উদ্রেকের পক্ষে যথেষ্ট” তাই বলা যায় যে, এ মহাপরাক্রমশালী রাজার মৃত্যুতে বাঙালি তাদের প্রথম স্বাধীন সার্বভৌম রাজাকে হারায়। ইতিহাসে শশাঙ্কের রাজত্বকালের গুরুত্ব অপরিসীম।