সংস্কৃতির সমন্বয়বাদিতা কি । সংস্কৃতির সমন্বয়বাদিতা বলতে কী বুঝ
সংস্কৃতির সমন্বয়বাদিতা কি । সংস্কৃতির সমন্বয়বাদিতা বলতে কী বুঝ |
সংস্কৃতির সমন্বয়বাদিতা কি । সংস্কৃতির সমন্বয়বাদিতা বলতে কী বুঝ
- অথবা, সংস্কৃতির সমন্বয়বাদিতা কাকে বলে।
উত্তর : ভূমিকা : বাঙালি সংস্কৃতি অনেক প্রাচীন। এ সংস্কৃতির মূল বাঙালি সংস্কৃতি অনেক প্রাচীন। এ সংস্কৃতির মূল উৎস হলো অষ্টিক, দ্রাবিড়, মঙ্গোলীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান, তত্ত্ব ও মনন।
এদেশের মানুষ কখনো স্বকীয় সত্তার সহজ ও স্বাভাবিক বিকাশ ঘটাতে পারেনি। তা সত্ত্বেও বলতে হয়, বাঙালি সংস্কৃতির নিজস্বতা এদেশের মানুষ কখনো স্বকীয় সত্তার সহজ ও স্বাভাবিক বিকাশ ঘটাতে পারেনি।
তা সত্ত্বেও বলতে হয়, বাঙালি সংস্কৃতির নিজস্বতা রয়েছে। আর এ কারণে বাঙালির সংস্কৃতিতে সমন্বয়ধর্মিতা সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
→ সংস্কৃতি : সংস্কৃতি হলো মানুষের আচার-আচরণ, ব্যবহার্য বস্তু ও সমন্বয়। এর একদিকে রয়েছে মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পালনীয় বিভিন্ন আচার পদ্ধতি, আর অন্য দিকে আছে এবং তার জীবনব্যাপী ব্যবহার্য বস্তুসমূহ। এক কথায় বলা যায়, মানুষ যা করে তাই-ই সংস্কৃতি।
→ সংস্কৃতির সমন্বয়বাদিতা : বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ- খাইয়ে চলাই হলো সংস্কৃতির সমন্বয়বাদিতা। প্রত্যেক জাতির মধ্যে সংস্কৃতির ভিন্নতা লক্ষ করা যায়।
মুসলিম সংস্কৃতি হিন্দু সংস্কৃতি থেকে পৃথক। প্রভু-ভৃত্য, চোর-ডাকাতের সংস্কৃতির মধ্যেও ভিন্নতা রয়েছে। সুতরাং ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসই সংস্কৃতির সমন্বয়বাদিতা।
এই সমন্বয় দুইভাবে হয়ে থাকে। প্রথমত সংস্কৃতির সঙ্গীকরণ। যখন একটি জাতি অন্য একটি জাতির সংস্পর্শে আসার পর আগত জাতির সাংস্কৃতির উপাদান গ্রহণ করে নিজেদের সংস্কৃতির রূপান্তর ঘটায়, তখন সংস্কৃতির সঙ্গীকরণ হয়।
দ্বিতীয় সংস্কৃতির অন্তরীকরণ। এ প্রক্রিয়ায় এক সংস্কৃতির ব্যক্তিবর্গ অন্য সংস্কৃতির ব্যক্তিবর্গের সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণ গ্রহণ করে থাকে। এভাবে সংস্কৃতির সমন্বয়বাদিতা সাধিত হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, বাঙালির সংস্কৃতিতে সমন্বয়বাদিতার প্রভাব অতি মাত্রায় লক্ষ করা যায়। বিশ্বে এমন কোনো দেশ নেই যেখানে ধর্মীয় দাঙ্গা নেই, হানাহানি নেই, মারামারি নেই, বরং সকলেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান কামনা করে।
বাঙালির ধর্ম, সংস্কৃতি, সভ্যতা কোনোটিই তার নিজস্ব নয়। বাঙালি বিদেশি সংস্কৃতি ধারণ করা একটি জাতি। কিন্তু বাঙলি তার চিন্তা-চেতনা আত্মনির্ভরশীলতা কখনোই ভুলে যায়নি।