পলাশীর যুদ্ধের গুরুত্ব আলোচনা করো
পলাশীর যুদ্ধের গুরুত্ব আলোচনা করো |
পলাশীর যুদ্ধের গুরুত্ব আলোচনা করো
- অথবা, পলাশির যুদ্ধের গুরুত্ব কীরূপ ছিল?
- অথবা, পলাশি যুদ্ধের গুরুত্ব সংক্ষেপে লেখ ।
উত্তর : ভূমিকা : যেকোনো জাতির বা জনগোষ্ঠীর ইতিহাসে কিছু তারিখ ও সাল গুরুত্বপূর্ণ, তা হতে পারে আনন্দপূর্ণ, গুরুগাম্ভীর্যপূর্ণ, দুঃখের। সে দিনটি হলো ১৭৫৭ সালের ২৩ জুনের পলাশীর যুদ্ধ। এ যুদ্ধের ঘটনা ও ফলাফল সুদূরপ্রসারী।
→ পলাশির যুদ্ধের গুরুত্ব : পলাশির যুদ্ধ এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে, এই যুদ্ধে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়েছে। এ যুদ্ধে নবাব সিরাজের বাহিনী পরাজিত হয়।
এই পরাজয়ের ফলে ইংরেজরা এখানকার কর্তৃত্ব গ্রহণ করে। ক্রমান্বয়ে সেই কর্তৃত্ব সমগ্র ভারতে | ছড়িয়ে পড়ে।
১৭৫৭ সালের ২৩ জুন নবাব বাহিনী পরাজিত হলে ২৪ জুন পূর্ব আকাশে ঠিকই সূর্য উঠেছিল কিন্তু ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সূর্য উঠতে পরবর্তীতে আরো ১৯০ বছর লেগেছিল।
পলাশি যুদ্ধের ফলে বাংলা আর্থসামাজিক দিক দিয়ে ভেঙ্গে পড়ে। ইংরেজরা এখানে দাপটের সাথে রাজত্ব করে।
এ যুদ্ধে জয়লাভের মাধ্যমে ইংরেজরা অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক লাভবান হয়েছিল অন্যান্য দিকের সাথে সাথে। তারা মীর জাফরের সাথে চুক্তি মোতাবেক পলাশীর যুদ্ধের পর প্রচুর অর্থ সম্পত্তির অধিকারী হয়।
তাদের ব্যবসায়-বাণিজ্য তখন সরগমভাবে চলতে থাকে। এর ফলে এদের অর্থনৈতিক ভিত্তি সবল হতে থাকে। যেহেতু মুসলমানরা ছিল ইংরেজদের বিরুদ্ধ পক্ষ।
তাই পলাশীর যুদ্ধের পর তারা ইংরেজদের রোষানলে পড়ে। এতে তাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি নাজুক হয়ে পড়ে। এভাবে ইংরেজরা অর্থনৈতিক শোষণ চালাতে থাকে।
বাংলার সকল শ্রেণির উপর। তাদের অত্যাচারে বাংলার মানুষের দশা খুব খারাপ হয়ে যায়। সবকিছু থেকে তারা বঞ্চিত হতে থাকে
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, নানা দিক দিয়ে পলাশির যুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ। সামরিক দিক দিয়ে এ যুদ্ধের গুরুত্ব ততোটা না হলেও রাজনৈতিক দিক দিয়ে এটা ছিল নিঃসন্দেহে বাংলার ইতিহাসে একটি সর্বাধিক বেদনাবহ ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।