পাণ্ডু রাজার ঢিবি কি । পাণ্ডু রাজার ঢিবির বর্ণনা লিখ
পাণ্ডু রাজার ঢিবি কি । পাণ্ডু রাজার ঢিবির বর্ণনা লিখ |
পাণ্ডু রাজার ঢিবি কি । পাণ্ডু রাজার ঢিবির বর্ণনা লিখ
- অথবা, পাণ্ডু রাজার ঢিবি সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : ইতিহাস রচনার উৎসগুলোর মধ্যে স্থাপত্য নিদর্শন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাস রচনার উৎসসমূহ মূলত দুই প্রকার। যথা- লিখিত উপাদান ও অলিখিত উপাদান।
সাহিত্য নথিপত্র, ভ্রমণ কাহিনী, জীবনী ইত্যাদি লিখিত উপাদানের অন্তর্ভুক্ত। আর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, মুদ্রা, মূর্তি, লিপিমালা, ইমারত, ভাস্কর্য, স্মৃতিস্তম্ভ ইত্যাদি অলিখিত উপাদানের অন্তর্ভুক্ত।
অলিখিত উপাদানের মধ্যে ভাস্কর্য অন্যতম একটি উপাদান। আর পাণ্ডুরাজার ঢিবি ভাস্কর্য নিদর্শনের একটি অন্যতম দিক।
পাণ্ডু রাজার ঢিবি : বর্ধমানের অজয় নদীর তীরে প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বেকার বাংলার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এক উন্নত মাত্রার সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে।
এখানে পাণ্ডুরাজার ঢিবি বলে একটি অঞ্চল আছে। আর এ ঢিবিতে একটি গোলাকার সিল পাওয়া গেছে। সিলটি স্টিটাইট পাথর দ্বারা নির্মিত এবং সিলটিতে খোদিত চিহ্নগুলো হলো চিত্রাক্ষর বা Pictograph।
এছাড়াও এখানে কিছু নারী মূর্তিও আবিষ্কার হয়েছে। ধারণা করা হয় যে, এ গোলাকার সিলটি আনুমানিক সাড়ে তিন হাজার বছর পূর্বে ভূমধ্যসাগরীয় ক্রিট দ্বীপে নির্মিত হয়।
যা থেকে ধারণা করা হয় যে, ক্রিট দ্বীপের সাথে প্রাচীন বাংলার অর্থনৈতিক লেনদেন তথা ব্যবসা-বাণিজ্য প্রচলিত ছিল।
যাইহোক প্রত্নতাত্ত্বিকগণ মাটি খুঁড়ে বর্ধমান জেলার অজয় নদীর তীরে প্রাপ্ত সভ্যতা আবিষ্কার করেছিল এবং সাথে সাথে পাণ্ডু রাজার ঢিবির নিদর্শনটি তাঁরা আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছিল।
নোয়াখালীতে প্রাপ্ত কিছু শিলালিপি থেকে বাংলায় মৌর্য বংশের পতন ও শুঙ্গদের উত্থান সম্পর্কে জানা যায় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাচীন বাংলার ইতিহাস পুনর্গঠনে যেসব অলিখিত উপাদান অবদান রাখে সেগুলোর মধ্যে ভাস্কর্য নিদর্শন হিসেবে পাণ্ডুরাজার ঢিবি অন্যতম একটি উপাদান।
এ ঢিবি থেকে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা -যায় এবং প্রাচীন বাংলার অধিবাসীরা যে এক উন্নত সভ্যতার পত্তন করেছিল সেটাও এ ঢিবির মাধ্যমে জানা যায়।