নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল জানতে চান
নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল - বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন শাসক ছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। নবাব সিরাজদৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল বাংলার ইতিহাসে এটু খুবই দুঃখজনক ঘটনা। নবাব সিরাজউদ্দৌলা খুব কম সময়ই রাজত্ব করার সুযোগ পান। সময়কাল হচ্ছে ১৭৫৬ থেকে ১৭৫৭ সাল।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল জানতে চান |
তার রাজত্বকালের সমাপ্তির পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজত্ব শুরু হয়। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল
নবাব সিরাজউদ্দৌলার যখন মাত্র ২৩ বছর বয়স তখন তিনি তার নানা আলি বর্দি খানের মাধ্যমে ১৭৫৬ সালে বাংলায় রাজত্ব করার ক্ষমতা লাভ করেছিলেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার যে বছর মৃত্যু বরণ করেছিলেন সেটা ছিল ১৭৫৭ সাল।
কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদের গন্তব্য স্থলে হুগলি, কাটোয়ার দুর্গ, অগ্রদ্বীপ ও পলাশীতে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সৈনিক থাকার পরেও তারা কেউ ইংরেজদের পথ আটকানোর চেষ্টা করেনি।
নবাব যখন বুঝতে পারলেন মীরজাফর তাকে ঠকানোর চিন্তা করছেন তখন তিনি মীরজাফর কে দামানোর চেষ্টা করা বাদ দিয়ে দিলেন এবং মীরজাফরকে কুরআন স্পর্শ করিয়ে শপথ বাক্য পড়ালেন- মীরজাফর বললেন তার দেহে এক ফোটা রক্ত থাকা অবস্থায় তিনি বাংলার স্বাধীনতা বিক্ষুন্ন হতে দিবেন না।
২৩ জুন সকালে ইংরেজরা যুদ্ধের জন্য পলাশী প্রান্তরে অবস্থান করলো ও লক্ষ্যবাগ নামের একটি বাগানে তাদের সৈন্য সদস্যদের প্রবেশ করালো।
বেলা আটটার সময় মীর মদন ইংরেজদের সেনাবাহিনীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মীর মদনের আক্রমণে কন্ট্রোল করতে না পেরে লর্ড ক্লাইভ তার সেনাবাহিনীদের নিয়ে সেই বাগানে অংশ নেন।
লর্ড ক্লাইভ যুদ্ধের সময় কিছুটা বিচলিত অবস্থায় পড়ে গেলেও মীর মতন কিন্তু ঠিকই সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
দুঃখের বিষয় হচ্ছে মীরজাফর, ইয়ার লতিফ ও রায়দুর্লভ সেখানে উপস্থিত থাকার পরও মীরমদন কে কোন সহায়তা করেনি হয়তো তাদের সহায়তা পেলেন মীরমদন ইংরেজদের পরাজয় স্বীকার করতে পারতো।
দুপুর দিকে হঠাৎ যখন প্রচন্ড বৃষ্টিপাত শুরু হয় তখন নবাব সিরাজউদ্দৌলার গোলাবারুদ ভিজে নষ্ট হয়ে যায় এবং অপরদিকে মীরমদন তার যুদ্ধ চালিয়ে যায়। যুদ্ধের একপর্যায়ে মীরমদন ইংরেজদের গোলার আঘাতে মৃত্যুবরণ করেন।
মীরজাফর তার শপথ ও কমিটমেন্ট ভঙ্গ করে তার সৈন্যদলকে শিবিরে ফেরার নির্দেশ দিয়েছেন। এই সুযোগে ইংরেজরা নবাবকে আক্রমণ করে তার ছাউনি তাদের আন্ডারে নিয়ে যায়।
ইংরেজদের পক্ষে কয়েকজন ইউরোপিয়ান এমনকি দেশের সৈন্যেরাও নিহত হয়। এই খবর পেয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ২০০০ সৈন্য নিয়ে মুরশিদাবাদের দিকে রওনা হয়।
রাজধানীর রক্ষা করার জন্য কেউ সিরাজউদ্দৌলাকে সাহায্য না করায় তিনিই তার স্ত্রী ও গোলামকে নিয়ে ভগবানগোলায় পৌঁছে যান। মীরজাফর রাজধানীতে ফিরে এসে যখন দেখেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা সেখানে নেই তখন তিনি তাকে খোঁজার জন্য লোক পাঠালেন।
১৭৫৭ সালের ৩ জুলাই নবাব সিরাজউদ্দৌলা মহানন্দা নদী পার করে আসলেও হঠাৎ করে জোয়ার ভাটার ফলে পানি কমে যাওয়ায় নাজিমপুরের মোহনায় তার নৌকা আটকে যায়।
এরপর তিনি খাবার সংগ্রহের জন্য নৌকা থেকে নেমে মসজিদে নিকটবর্তী বাজারের কাছে যান। সেখানে কিছু লোক তাকে চিনে ফেলে এবং মীরজাফরের সৈন্যবাহিনীকে খবর দেয়।
অনেকের ধারণা মতে, একজন ফকির নবাবের দ্বারা অন্যায়ের কারনে শাস্তি প্রাপ্ত হয়ে একটি কান হারায় যার কারণে সেই ফকির নবাবের খবর মীরজাফরের কাছে পৌঁছে দেয়।
এরপর মির্জাপুরের সৈন্যবাহিনীরা এসে না নবাবকে আটক করে রাজধানী মুর্শিদাবাদে নিয়ে যায়।নবাব কে যখন আটক করা হয় তখন তার সঙ্গে তার স্ত্রী এবং চার বছরের কন্যা উপস্থিত ছিল।
এরপর দিন মীরজাফরের আদেশে মুহম্মদিবেগ নামক একজন ঘাতক নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে মেরে ফেলেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল.....