মুঘল আমলের শিক্ষা সংস্কৃতির অবস্থা কেমন ছিল
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুঘল আমলের শিক্ষা সংস্কৃতির অবস্থা কেমন ছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুঘল আমলের শিক্ষা সংস্কৃতির অবস্থা কেমন ছিল । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মুঘল আমলের শিক্ষা সংস্কৃতির অবস্থা কেমন ছিল |
মুঘল আমলের শিক্ষা সংস্কৃতির অবস্থা কেমন ছিল
- অথবা, মুঘল আমলের শিক্ষা সংস্কৃতির বর্ণনা দাও ।
উত্তর : ভূমিকা : মুঘল আমল ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী অধ্যায়। যেখানে সমাজের সকল দিকের ন্যায় শিক্ষা সংস্কৃতিও ছিল মার্জিত ও রুচিসম্মত।
যদিও তখনো শিক্ষায় আধুনিকতা ও বিজ্ঞান চর্চার যথেষ্ট সুযোগ ছিল না। তবুও মানুষ দর্শন, আইন, গণিত, সঙ্গীত ও সাহিত্যে প্রভূত উন্নতি করেছিল এবং এর জন্য ছিল উন্নতমানের শিক্ষাকেন্দ্র ।
→ মুঘল আমলের শিক্ষাব্যবস্থা : নিম্নে মুঘল আমলের শিক্ষাব্যবস্থা আলোচনা করা হলো :
১. ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা : কোম্পানি আমলের পূর্বে অর্থাৎ ভারতে কোম্পানির প্রবর্তিত পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের পূর্বে মূলত ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। ধর্মীয় উৎকর্ষ সাধন এবং ধর্মীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ হওয়ার জন্যই মূলত তখন মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করতো।
২. মক্তব বা গ্রাম্য পাঠশালাভিত্তিক : উইলিয়াম এডাম ১৮৩৫, ১৮৩৬, ১৮৩৭ দেশীয় শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে বলেন, এখানে মূলত দ্বি-স্তর বিশিষ্ট শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলিত ছিল ।
১. মক্তব ও মাদ্রাসা এবং
২. পাঠশালা ও টোল ।
টোলে সাধারণত সংস্কৃত ভাষা শিক্ষা আর মাদ্রাসায় আরবি, ফারসি ও উর্দু শিক্ষা দেওয়া হতো।
৩. হিন্দু শিক্ষাব্যবস্থা : ব্রিটিশ পূর্ব ভারতে মূলত হিন্দু এবং মুসলমানদের জন্য আলাদা শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। হিন্দুরা মূলত সংস্কৃত ভাষায় জ্ঞানচর্চা করতো। আর শিক্ষা কেন্দ্র ছিল গ্রাম্য পাঠশালা ও উচ্চ শিক্ষায় টোল।
৪. মুসলিম শিক্ষাব্যবস্থা : মুসলিমরা সাধারণত মক্তব শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য মাদ্রাসায় যেত। এখানে তারা আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষায় সাহিত্যচর্চা করতো। তবে এ সময় শিক্ষা শুধুমাত্র অভিজাত শ্রেণির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
৫. উচ্চশিক্ষার বিষয় : ভারতে বিজ্ঞান চর্চার তেমন কোনো সুযোগ ছিল না। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য সাধারণত পাঠ্য বিষয় ছিল আরবি ও ফারসি সাহিত্য, ব্যাকরণ, তর্কশাস্ত্র, দর্শন, চিকিৎসা শাস্ত্র ইত্যাদি।
৬. উচ্চশিক্ষা কেন্দ্র : তখন ভারতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ এতো সহজলভ্য ছিল না। হিন্দুদের উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে নদীয়া বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিল।
বিদেশিদের কাছে নদীয়া ছিল। অক্সফোর্ডতুল্য । তাছাড়া নদীয়ার শিক্ষকদের পাণ্ডিত্য ও চারিত্রিক উৎকর্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
→ মুঘল আমলে সংস্কৃতি : নিম্নে মুঘল আমলের শিক্ষা সংস্কৃতির অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. পোশাক-পরিচ্ছদ : মুঘল আমলে অভিজাত মুসলিমরা সাধারণত বড় ঢিলেঢালা আলখেল্লা টাইপের কাপড় পরতো, এছাড়া দামি রেশমি কাপড়ও মুঘল অভিজাত শ্রেণির লোকজন ব্যবহার করতো। তবে নিম্নশ্রেণির মানুষ ঐ গতানুগতিক শাড়ি, ধুতি, পাঞ্জাবি, লুঙ্গি এগুলোই পরতো।
২. খাদ্যাভ্যাস : মুঘল শাসকরা যেহেতু তুর্কি ছিল। তাই সাধারণত তারা খুবই ভোজন বিলাসী ছিল। কোর্মা, পোলাও কাবাব ইত্যাদি খাবার মুঘলদের অবদান। তাছাড়া সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক ভাত-মাছ, মাংস ইত্যাদি খেতো।
৩. ধর্মীয় বিশ্বাস ও রীতিনীতি : মুঘল শাসকরা মোটামুটি মুসলিম ছিল তাই ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি পালন করতো। তবে রাজদরবারে রানিদের জন্য মন্দিরও ছিল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুঘল আমলে শিক্ষা সংস্কৃতিতে কিছুটা ব্যবধান ছিল অভিজাত ও সাধারণ শ্রেণির মধ্যে। অভিজাত সাধারণত ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতি পালন করতো আর সাধারণ মানুষের পক্ষে শিক্ষা গ্রহণের খুব একটা সুযোগ ছিল না।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুঘল আমলের শিক্ষা সংস্কৃতির অবস্থা কেমন ছিল
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুঘল আমলের শিক্ষা সংস্কৃতির অবস্থা কেমন ছিল । যদি তোমাদের আজকের মুঘল আমলের শিক্ষা সংস্কৃতির অবস্থা কেমন ছিল পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।