মারজ ই দাবিকের যুদ্ধের ফলাফল কি ছিল
মারজ ই দাবিকের যুদ্ধের ফলাফল কি ছিল |
মারজ ই দাবিকের যুদ্ধের ফলাফল কি ছিল
- অথবা, মারण-ই-দাবিকের যুদ্ধের ফলাফল লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : ১৫১৬ সালের ২৪ আগস্ট আলেপ্পোর উত্তরে অবস্থিত মারজ-ই-দাবিকের প্রান্তরে অটোমান সুলতান প্রথম সেলিম ও মিশরের মামলুক সুলতান কানসুয়া আল ঘুরীর মধ্যে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয় তাই মারজ-ই-দাবিকের যুদ্ধ নামে খ্যাত, ইসলামের ইতিহাসে এ যুদ্ধের ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারি।
→ মারজ-ই-দাবিকের যুদ্ধের ফলাফল : অটোমান সুলতান সেলিম কর্তৃক মিশর ও সিরিয়া বিজয় ইসলামের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা। এর ফলে দীর্ঘ প্রায় আড়াইশত বছরের অধিক পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী মিশরের মামলুক সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।
তেরো শতকের প্রথম হতে আরব জগৎ যখন জ্ঞান, বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পশ্চাৎপদ তখন মামলুক বংশের অভ্যুদয়ের মাধ্যমে সুলতানদের পূর্বেকার সেই গৌরবোজ্জ্বল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারা পুনরুজ্জীবিত হয়ে অব্যাহত গতিতে চলতে থাকে।
কিন্তু অটোমান কর্তৃক মিশর বিজয়ের ফলে, তাদের সেই বুদ্ধিভিত্তিক ও সাংস্কৃতিক প্রগতি ম্লান হয়ে যায়। অটোমানদের বিজয়ের ফলে ইসলামি বিশ্বে কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কায়রো তুরস্কের একটি প্রাদেশিক শহরে পরিণত হয়।
জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ভূমধ্যসাগরীয় বিশ্ব পশ্চাৎপদ হয়ে পড়ে। এ বিজয়ের ফলে মক্কা ও মদিনা তুর্কিদের অধীনে চলে যায়। এতদিন ধরে খুতবার যে আব্বাসীয় খলিফাদের নাম পাঠ হতো, অটোমানদের বিজয়ের পর তদস্থলে সেলিমের নাম পঠিত হতে থাকে।
সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে মিশর যে অবদান রেখেছিল, সেলিম সেই মিশর হতে ১৮০০ শিল্পী, কারিগর ও নানা অভিজ্ঞ ব্যক্তিসহ মিশরের উন্নত ধরনের ঘোড়া, উট প্রভৃতি কনস্টান্টিনোপলে নিয়ে মিশরীয় সাম্রাজ্যের ম্লান ঘটান।
উপসংহর : পরিশেষে বলা যায় যে, বিভিন্ন পটভূমিতে মারজ-ই-দাবিকের যুদ্ধ একটি যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা করে।
এটি আড়াইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী মামলুক বংশকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলে এবং কায়রোর পরিবর্তে কনস্টান্টিনোপল কেন্দ্রিক সভ্যতার উত্থান ঘটায়। আর তাই ইতিহাসে মারজ-ই-দাবিকের গুরুত্ব অপরিসীম ।