মালিক শাহ কে ছিলেন । মালিক শাহ সম্পর্কে আলোচনা কর
মালিক শাহ কে ছিলেন । মালিক শাহ সম্পর্কে আলোচনা কর |
মালিক শাহ কে ছিলেন । মালিক শাহ সম্পর্কে আলোচনা কর
- অথবা, মালিক শাহের উপর একটি টাকা লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : সেলভুক বংশের মধ্যে মাণিক শাহ সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন। মালিক শাহের শাসনামলে সেলজুক বংশ ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে উপনীত হয়।
সাম্রাজ্য বিস্তার, প্রশাসনিক সংস্কার, বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী কাজ ও জ্ঞান বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে মালিক শাহের শাসনকালকে সেলযুক বংশের স্বর্ণযুগ বলা হয়ে থাকে।
১. মালিক শাহের পরিচয় : মালিক শাহ ছিলেন সেলজুক বংশের প্রতিষ্ঠাতা ভূগ্রিল বেগের ভাইয়ের ছেলে। তার পিতার নাম ছিল আলপ আরসালান।
১০৭২ সালে পিতার মৃত্যুর পর মালিক শাহ সেলজুক সিংহাসনে আরোহণ করেন। সেলজুক বংশের একজন যোগ্য শাসক হিসেবে ১০৭২ সাল থেকে ১০৯২ সাল পর্যন্ত যোগ্যতার সাথে শাসনকার্য পরিচালনা করেন।
২. বিদ্রোহ দমন : মালিক শাহ সিংহাসনে আরোহণ করলে তার বিরুদ্ধে তার এক ভাই বিদ্রোহ ঘোষণা করে। মালিক অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে সকল বিদ্রোহ দমন করে সাম্রাজ্যে শাস্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেন।
৩. রাজ্য জন্ম : মালিক শাহ অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমন করে রাজ্য জয়ে মনোনিবেশ করেন। তিনি আব্বাসীয় সাম্রাজ্য সীমানা বৃদ্ধি করেন।
তার সময়ে মুসলিম সাম্রাজ্য কাশ্মির থেকে পশ্চিম ভূমধ্যসাগর, উত্তর জর্জিয়া থেকে দক্ষিণ ইয়েমেন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল।
৪. রাজধানী স্থানান্তর : মালিক শাহ শাসনকার্য সুবিধার জন্য ইস্পাহান থেকে বাগদাদে রাজধানী স্থানান্তর করেন। এতে করে শাসন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়।
৫. শিক্ষা বিস্তার : মালিক শাহ একজন শিক্ষা অনুরাগী মানুষ ছিলেন। তিনি ১০৬৫-৬৭ সালে নিজামিয়া মাদ্রাসা নামে ইসলামের সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেন।
৬. মানমন্দির প্রতিষ্ঠা : নিজামূল মূলকের পরামর্শে মালিক শাহ নিশাপুরে একটি মানমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এ মানমন্দিরে অনেক আনীগুণী পণ্ডিত লোকের সমাগম ছিল। ওমর খৈয়াম এ মানমন্দিরের শ্রেষ্ঠ গণিতবিদ, জ্যোর্তিবিদ্যাবিদ ছিলেন।
৭. জনহিতকর কার্যাবলী : মালিকশাহ একজন জনদরদী শাসক ছিলেন। তিনি প্রজাদের মঙ্গলের জন্য বহু রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ ও খাল খনন করেন। তিনি ইস্পাহান জামে মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন।
৮. মৃত্যু : মালিক শাহ ১০৯২ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মারা যান। তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ২১ বছর শাসন করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মালিক শাহ সেলজুক বংশের একজন অন্যতম শাসক হিসেবে যথেষ্ট খ্যাতি লাভ করেন।
তিনি তার নিজ যোগ্যতা দক্ষতার ফলে সেলজুক বংশের গৌরব বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। সেলজুক বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক হিসেবে ইসলামের ইতিহাসে তার নাম স্মরণীয় হয়ে থাকবে।