কর্নওয়ালিস কোড কি । কর্নওয়ালিস কোড কাকে বলে
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো কর্নওয়ালিস কোড কি । কর্নওয়ালিস কোড কাকে বলে জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের কর্নওয়ালিস কোড কি । কর্নওয়ালিস কোড কাকে বলে । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।।
কর্নওয়ালিস কোড কি । কর্নওয়ালিস কোড কাকে বলে |
কর্নওয়ালিস কোড কি । কর্নওয়ালিস কোড কাকে বলে
- অথবা, কর্ণওয়ালিশ কোড সম্পর্কে লিখ।
- অথবা, কর্ণওয়ালিশ কোড সম্পর্কে ধারণা দাও ।
- অথবা, কর্ণওয়ালিশ কোডের পরিচয় দাও।
উত্তর : ভূমিকা : পৃথিবীর ইতিহাসে যুগে যুগে এমনকিছু আইন সংস্কারক থাকেন যাদের সংস্কারকৃত আইন পরবর্তীতে মানুষদের পথ চলার স্মরণিকা হিসেবে কাজ করে।
পৃথিবীর ইতিহাসে বিভিন্ন কোডগুলোর মধ্যে নেপোলিয়ন কোড, জাষ্টিসিয়ান কোড যেমন বিখ্যাত ও আলোচিত, তেমনি ব্রিটিশ গভর্নর লর্ড কর্নওয়ালিশ প্রবর্তিত কর্নওয়ালিশ কোডও স্মরণীয় হয়ে আছে ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে।
কর্নওয়ালিশ কোড ১৭৯৩ সালের ১ মে লর্ড কর্ণওয়ালিশ তার বিখ্যাত কর্ণওয়ালিশ কোন ঘোষণা করেন। এই কোডের মোট রেগুলেশন সংখ্যা ছিল ৪৮টি। এ ৪৮টি রেগুলেশনে কর্ণওয়ালিশের বিচারব্যবস্থা, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, কাজ ও ক্ষমতার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।
নিম্নে এর কয়েকটি ধারা তুলে ধরা হলো-
(ক) নিরপেক্ষ আদালত : কর্নওয়ালিশ কোডের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল শাসন বিভাগ থেকে মুক্ত একটি বিচার ব্যবস্থা। প্রতি জেলায় একজন করে জর্জ নিযুক্ত করে।
সমস্ত বিচার ক্ষমতা রে আওতাভুক্ত করা হয়। তাছাড়া জেলায় নিযুক্ত এই অর্থ ছিলেন বিচারের ক্ষেত্রে স্বাধীন সার্বভৌম।
(খ) ডিভিশনের সৃষ্টি : বিচারক সুবিধার্থে তিনি জেলাসমূহকে চারটি প্রশাসনে বিষক্ত করেন। ডিভিশনসমূহ ছিল ঢাকা, মুর্শিদাবাদ, কলকাতা ও পাটনা। প্রত্যেক প্রদেশে ছিল আলাদা প্রাদেশিক আপিল আদালত
(গ) আপিলের সুযোগ : পূর্বে মামলা করার জন্য ২% হারে অর্থ জমা রাখার বিধান বাতিল করে জেলা আদালতের রায় সম্পর্কে উক্ত আদালতে আপিল করার সুযোগ দেয়া হয়।
(ঘ) সমতা বিধান : পূর্বে ব্রিটিশ সরকার ও কোম্পানির অফিস ছাড়া কোনো ব্রিটিশ নাগরিকের কলকাতার ১০ মাইলের বাইরে গমনাগমন ও বসবাস নিষিদ্ধ করা হয়।
এই আইন রন করে পরে বলা হয় যদি কেউ মফস্বলে বাস করতে চায় তবে সরকারের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে এবং তার বিরুদ্ধে স্থানীয়রা নির্যাতিত হলে স্থানীয় আদালতে মামলা করতে পারবেন।
পূর্বে ব্রিটিশ নাগরিকের বিচার করতে একমাত্র কলকাতা সুপ্রিম কোর্ট এবং কোম্পানির কোন কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো স্থানীয় ব্যক্তি মামলা করতে পারত না, কোডে এই আইন রদ করে আইনের দৃষ্টিতে সকলের সমান অধিকার দেওয়া হয় এবং প্রয়োজনে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধেও আদালতে মামলা করার অধিকার দেওয়া হয়।
(৩) নেটিভ কমিশনার নিয়োগ : গ্রামাঞ্চলে স্থানীয়ভাবে পাতি মামলা-মোকদ্দমা সালিশের মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য নেটিভ কমিশনার নিযুক্ত করা হয়। নেটিভ কমিশনারের কোর্টে অনুর্ধ্ব ৫০ টাকা মূল্যের মামলা পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়।
(চ) ঋণ দেওয়া ও জমি ক্রয় নিষিদ্ধ : এই কোডে ঘোষণা করা হয় ইউরোপীয় সিভিলিয়ান কর্তৃক দেওয়া দেশীয় লোকদের ঋণ দেওয়া বা জমি কেনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
(ছ) দৈহিক নির্যাতন নিষিদ্ধ : পূর্বে বকেয়া খাজনা আদায়ের অন্য প্রজাদের দৈহিকভাবে নির্যাতন করা হয়। কিন্তু এই কোডে বলপ্রয়োগের পরিবর্তে আদালতের আশ্রয় নিতে বলা হয়।
(জ) উত্তরাধিকার আইন : পূর্বে বড় জমিদার পরিবারের মধ্যে প্রচলিত হিন্দু বা মুসলমান উত্তরাধিকার আইনের বদলে শুধু পিতার জ্যেষ্ঠ জীবিত পুত্রের জমিদারির উত্তরাধিকার লাভের কথা প্রচলিত ছিল।
জমিদারি অটুট ও অক্ষত রাখার জন্য এ প্রথা অনুসরণ করা হয়। এই কোডে এ প্রথা বিলুপ্ত করে এখন থেকে ছোট বড় জমিদারির বেলায় এই হিন্দু বা মুসলিম ধর্মবিশেষের আইন প্রয়োগ করা হয়।
(ঝ) চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত : এই কোডের সব আইন প্রতিষ্ঠান শুধু একটি প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে প্রতিষ্ঠিত হয়। তা হল চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। এই আইনে বলা হয়, এখন থেকে জমির মূল মালিক জমিদার।
জমিদার তার ইচ্ছায় জমি বিক্রি, দান, বন্ধক, ইত্যাদি করতে পারবেন । সরকারের রাজস্ব নির্দিষ্ট করে খাস করা হলো।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৭৯৩ সালে লর্ড কর্নওয়ালিশ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে ৪৮টি আইন বিশিষ্ট একটি কোড রচনা করেন। এই কোড রচনায় তার উদ্দেশ্য যথার্থ। থাকলে তা বাস্তবায়নের জন্য ভারতবর্ষ উপযুক্ত ছিল না।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ কর্নওয়ালিস কোড কি । কর্নওয়ালিস কোড কাকে বলে
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম কর্নওয়ালিস কোড কি । কর্নওয়ালিস কোড কাকে বলে । যদি তোমাদের আজকের কর্নওয়ালিস কোড কি । কর্নওয়ালিস কোড কাকে বলে পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।