কোন কোন উৎস থেকে শশাঙ্ক সম্পর্কে জানা যায়
কোন কোন উৎস থেকে শশাঙ্ক সম্পর্কে জানা যায় |
কোন কোন উৎস থেকে শশাঙ্ক সম্পর্কে জানা যায়
- অথবা, শশাঙ্ক সম্পর্কে জানার উৎসগুলো কী কী?
- অথবা, শশাঙ্ক সম্পর্কে জানার উৎস সম্পর্কে তুমি কি জান?
উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে শশাঙ্ক একটি অন্যতম উজ্জ্বল নাম। বাংলার রাজাদের মধ্যে শশাঙ্ক ছিলেন। সর্বশ্রেষ্ঠ নৃপতি।
তিনি সামান্য অবস্থা হতে জীবন শুরু করে আপন কৃতিত্বে বাংলার শাসনপদে সমাসীন হয়েছিলেন। সপ্তম শতকের বাংলার ইতিহাসে গৌড়রাজ্য হিসেবে শশাঙ্ক সমধিক পরিচিত।
মহাভারতের মহাবীর কর্ণের ন্যায় তিনি প্রমাণ করেন যে, “জন্ম দৈব্যের অধীন হলেও পৌরুষ নিজের অধীন” সবদিক দিয়ে শশাঙ্ককে প্রাচীন বাংলার গুরুত্বপূর্ণ নৃপতি বলা যায় ।
→ শশাঙ্ক সম্পর্কে জানার উৎস : সুনির্দিষ্ট উৎসের অভাবে শশাঙ্কের বংশ পরিচয় সম্পর্কে সঠিক কিছু জানা যায়নি। কিংবা কিভাবে ক্ষমতা দখল করে সেই সম্পর্কেও কোনো সঠিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তার গৌড়রাজ্যে শশাঙ্ক সম্পর্কে কিছু তথ্য পাওয়া যায় বৌদ্ধগ্রন্থ ‘আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প' হতে। এছাড়াও বাণভট্টের হর্ষচরিত, হিউয়েন সাং এর বিবরণ, হর্ষবর্ধনের শিলালিপি এবং শশাঙ্কের কিছু মুদ্রা থেকে শশাঙ্ক সম্পর্কে জানা যায়।
প্রাচীন রোহিতাশ্বরে গিরিগাত্রে একটি শিলার ছাঁচ পাওয়া গেছে, তাতে ‘শ্রীমহাসামন্ত শশাঙ্ক' নাম খোদিত আছে। অনুমান
করা হয় যে, এ মহাসামন্ত শশাঙ্ক ও গৌড়াধিপতি শশাঙ্ক একই ব্যক্তি। কোনো কোনো ঐতিহাসিক মনে করেন যে, শশাঙ্ক মৌখরি রাজ্যের অধীন সামন্ত ছিলেন।
আবার কেউ কেউ মত প্রকাশ করেছেন যে, শশাঙ্কের অপর নাম ছিল নরেন্দ্রগুপ্ত এবং তিনি গুপ্ত বংশে জন্ম গ্রহণ করেন।
রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় শশাঙ্ককে মহাসেন গুপ্তের পুত্র বা ভ্রাতুষ্পুত্র বলে মত পোষণ করেছেন এবং এ. মতের পক্ষেও তেমন কোনো প্রমাণ নেই ৷
শশাঙ্কের মুদ্রায় তাঁর নাম একটি অক্ষরের নিচে আরেকটি অক্ষর উপর হতে নিচে খোদাই করা। যা থেকে, এইকথা স্পষ্ট যে, সপ্তম শতাব্দীর শুরুতে কোনো এক সময়ে শশাঙ্ক গৌড় রাজ্যের ক্ষমতাসীন হন। তাঁর রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শশাঙ্ক ছিলেন প্রাচীন বাংলার অন্যান্য শাসকদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নৃপতি। তিনি শুধু একজন শক্তিশালী রাজাই ছিলেন না, তিনি কূটনৈতিক ও মহান বীর ছিলেন । তার আগমনের ফলে বাংলার অনেক কল্যাণ সাধিত হয়েছে।