হর্ষবর্ধনের ধর্মমত সম্পর্কে যা জান লিখ
হর্ষবর্ধনের ধর্মমত সম্পর্কে যা জান লিখ |
হর্ষবর্ধনের ধর্মমত সম্পর্কে যা জান লিখ
উত্তর : ভূমিকা : উত্তর ভারতের স্থানেশ্বর এর পুষ্যভূতি রাজবংশের অন্যতম প্রভাবশালী রাজা হচ্ছেন হর্ষবর্ধন। বর্ষ তাঁর পিতা প্রভাকরবর্ধনের চেয়েও বেশি প্রভাবশালী ছিলেন।
ভ্রাতা রাজ্যবর্ধনের মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসেন। তিনি শুধু শ্রেষ্ঠ শাসকই ছিলেন না অন্যান্য গুণাবলিতেও তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ। ধর্মীয় ক্ষেত্রে তার যথেষ্ট সহানুভূতি ছিল।
→ হর্ষবর্ধনের ধর্মমত : নিচে হর্ষবর্ধনের ধর্মমত সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো :
১. পরধর্মে সহিষ্ণুতারনীতি : হর্ষবর্ধনের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন সূর্যের পূজারী। শিলালিপি থেকে জানা যায় হর্ষবর্ধন ছিলেন শেষ ধর্মের উপাসক।
তবে শেষের দিকে হর্ষবর্ধন বৌদ্ধধর্মের প্রতি অনুরাগ দেখান। কিন্তু সূর্য বা শিবের প্রতি তিনি কোনো অবহেলা দেখাননি। সব ধর্মমতের প্রতিই তিনি যথেষ্ট শ্রদ্ধা দেখাতেন।
২. মহাযান ধর্মের প্রতি অনুরাগ : হিউয়েন সাং এর প্রভাবে হর্ষবর্ধন বৌদ্ধধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি জীবহত্যা নিষিদ্ধ করেন। অশোকের মতো জনহিতকর প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। গঙ্গাতীরে তিনি বৌদ্ধধর্মের জন্যে বহু স্তূপ ও বিহার তৈরি করেন।
৩. কনৌজে বৌদ্ধ সম্মেলন : হিউয়েন সাং-এর সম্মানে তিনি কলৌলে বৌদ্ধ সম্মেলন আহ্বান করেন। প্রায় ২০ জন মিত্র রাজা ও কয়েক হাজার বৌদ্ধ পণ্ডিত এই সম্মেলনে যোগদান করেছিলেন। জৈন ও ব্রাহ্মণ পণ্ডিতরাও এ সম্মেলনে আহত হন।
একটি ১০০ মিটার উঁচু বিহার তৈরি করা হয় তাতে একটি বিরাট বৌদ্ধমূর্তি স্থাপন করা হয়। এ সম্মেলনে বৌদ্ধ দর্শন নিয়ে আলোচনা হতো। হিউয়েন সাংকে এ আলোচনা সভার সভাপতি করা হয়।
৪. প্রয়োগের দানমেলা : কনৌজের ধর্মসভার পর হর্ষবর্ধন প্রয়োগের সানমেলায় যোগদেন। প্রতি পাঁচ-বছর অন্তর অন্তর গঙ্গা-যমুনার সঙ্গমের কাছে এই মেলা বসত। এ মেলার নাম ছিল মহামোক্ষ পরিষদ।
পঞ্চভারতের প্রায় ৫০ হাজার লোক 4. মেলায় আসত। নাবালক অসহায় দারিদ্র্য ব্যক্তিরা এখানে হর্ষের হাত থেকে দান নিত। এছাড়া ব্রাহ্মণ শ্রমণ ও সন্ন্যাসীরা এই মেলার গান করতো প্রথম দিন বুদ্ধের উপাসনা করা হতো।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পেক্ষিতে একথা বলা যায় যে, হর্ষবর্ধনের ধর্মমত নিয়ে যথেষ্ট মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও একথা বলা যায় যে, তিনি পরধর্মে যথেষ্ট সহিষ্ণু ছিলেন।
হর্ষবর্ধন প্রত্যেক ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তিনি (হর্ষবর্ধন) একজন ভালো শাসক হওয়ার পাশাপাশি একজন ভালো ধর্মানুরাগী হওয়ার গৌরবও অর্জন করতে পেরেছিলেন।
মূলত পরধর্মে সংস্কৃতাই ছিল হর্ষবর্ধনের ধর্মনীতির অন্যতম ধর্মীয় দশর্ন। সমসাময়িককালে তার ধর্মীয় দর্শন ব্যাপকভাবে খ্যাতি অজর্ন করেছিল।