ফাতেমীয় সভ্যতা কি । ফাতেমীয় সভ্যতার পরিচয় দাও
ফাতেমীয় সভ্যতা কি । ফাতেমীয় সভ্যতার পরিচয় দাও |
ফাতেমীয় সভ্যতা কি । ফাতেমীয় সভ্যতার পরিচয় দাও
উত্তর : ভূমিকা : ওবায়দুল্লাহ আল মাহদী কর্তৃক ৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ফাতেমীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়। ফাতেমীয় খিলাফত সৃষ্টির মাধ্যমে মিশরে জ্ঞান-বিজ্ঞান, স্থাপত্য, কলা, শিল্প, মানুষের জীবন পদ্ধতি ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধিত হয়।
→ ফাতেমীয় সভ্যতা : সমাজবিজ্ঞানী ম্যাকাইভারের মতে, “আমরা যা কিছু করি তাই সংস্কৃতি, আর আমাদের যা কিছু আছে তাই সভ্যতা।”
আর তার এ মতামতকে বিশ্লেষণ করে বলা যায় ফাতেমীয় শাসনামলের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের উৎকৃষ্টরূপ তা এখনও বিশ্বে টিকে রয়েছে, তা ফাতেমীয় সভ্যতা নামে পরিচিত।
→ ফাতেমীয় সভ্যতার বর্ণনা : ফাতেমীয় সভ্যতার বর্ণনা নিচে প্রদান করা হলো :
১. জ্ঞান চর্চা : ফাতেমীয় খলিফাগণ ছিলেন জ্ঞান-বিজ্ঞানের উদার পৃষ্ঠপোষক। খলিফা আল মুইজ চিকিৎসাবিদ্যা ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান চর্চায় বিশেষ উৎসাহ দিতেন।
২. গ্রন্থাগার : আরব পরিজাত জ্ঞানের সর্বশাখা ও সুকুমার সাহিত্যের লক্ষাধিক পুস্তক ফাতেমীয় খলিফাদের কুতুবখানায় সংগৃহীত হয়।
৩. কারুশিল্প : ফাতেমীয় খলিফারা ছিল সংস্কৃতমনা। এই শাসনামলে শিল্পীরা রেশমি কাপড়, বুটিদার বস্ত্র, মখমল ও অন্যান্য | কাপড়ের মধ্যে লোহিত কুটিদার কিংখাবে স্বর্ণসূত্র দ্বারা ভ্রমণরত হস্তী ও মানুষসহ প্রমোদোদ্যান বয়ন করতেন।
৪. স্থাপত্য শিল্প : ফাতেমীয়দের সৌধ নির্মাতা হিসেবে সুখ্যাতি ছিল।
৫. চিত্রকলা : সুন্নি শিল্পরা সাধারণত জীবন্ত প্রাণীর চিত্র অঙ্কন করতেন না কিন্তু শিয়ারা তাতে কুণ্ঠিত হতো না। শিয়ারা এবং অন্যান্য ধর্মের প্রায় সকল শিল্পীরা চিত্রকলা অঙ্কন করতেন।
৬. সাহিত্য চর্চা : ফাতেমীয় শাসনামলে সাহিত্য চর্চায় ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। কেননা ফাতেমীয় শাসকদের বিদ্যোৎসাহিতার কারণে সাহিত্য চর্চার চরম বিকাশ লাভ করে।
উপসংহার : সর্বোপরি বলা যায় যে, ফাতেমীয় শাসনামলে বিভিন্ন ধরনের স্থাপত্য শিল্প, চিত্রকলার কারুশিল্প ইত্যাদি থেকে তাদের সভ্যতার পরিচয় বহন করে।