ফাতেমীয় খলিফা আল হাকিমের চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা কর
ফাতেমীয় খলিফা আল হাকিমের চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা কর |
ফাতেমীয় খলিফা আল হাকিমের চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা কর
- অথবা, ফাতেমীয় খলিফা আল হাকিমের চরিত্র সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভূমিকা : খলিফা আল হাকিম অন্যান্য খলিফার মধ্যে তিনি একজন অন্যতম শাসক ছিলেন। তিনি তার পিতা আল আজিজের মতো প্রভাবশালী, নিষ্ঠাবান ও প্রজাদরদি শাসক ছিলেন।
তার কিছু উদ্ভট নীতির কারণে তাকে পাগলা হাকিম বলে অভিহিত করা হয়।খলিফা আল হাকিমের পরিচয়: খলিফা আল হাকিম ৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই আগস্ট মিশরের কায়রো নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন।
তার পিতা ছিলেন ফাতেমীয় খিলফতের অন্যতম বিখ্যাত খলিফা আল আজিজ। মাতা ছিলেন আস সহিয়িদাহ তার মাতা ছিলেন খ্রিস্টান বংশোদ্ভূত আল আজদিয়াহ।
আল হাকিমের মূল নাম ছিল আবু আলি মুনসুর আল হাকিম বি আমর ইল্লাহ আল হাকিম ৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই অক্টোবর মাত্র ১১ বছর বয়সে ফাতেমীয় সিংহাসনে বসেন। তিনি ১০২১ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই ফেব্রুয়ারি মুকাত্তায়ে মৃত্যুবরণ করেন।
খলিফা আল হাকিমের চারিত্রিক গুণাবলি : ফাতেমীয় খলিফাদের মধ্যে হাকিম ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী শাসক। তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে যেমন ছিল সততা, ন্যায়নিষ্ঠা, সাহসীকতা, সুদক্ষতা তেমনি ছিল দুর্দর্শতা, হিংস্রতা এবং পাগলামীতে পরিপূর্ণ তার শাসনামলে তিনি যেমন জনকল্যাণমূলক ও প্রজাসহায়ক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
তেমনি আবার অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড পরিচালিত করে। ব্যতিক্রম শাসকের খেতাবও পেয়েছেন। খলিফা আল হাকিম দিনের পরিবর্তে রাতকে গুরুত্ব দিতেন বেশি।
তিনি রাতে মন্ত্রীদের সাথে মিটিং করতেন। তিনি দিনে সকল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার এবং রাতে খোলা রাখার নিয়ম চালু করেন।
আল হাকিম রাতে ধর্মীয় নেতাদের সাথে মিলিত হতেন এবং নগর ভ্রমণে বের হতেন। এছাড়া তিনি নারীদেরকে সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করেন।
শুকর ও কুকুর পোষাও নিষিদ্ধ করেন। তিনি মাসের একটা নির্দিষ্ট সময়ে রাতে মুকাত্তাম পাহারে গমন করতেন এবং সেখানে কয়েকদিন অবস্থান করতেন।
তিনি কি কারণে সেখানে অবস্থান করতেন তা আজও ঐতিহাসিকগণের নিকট অদৃশ্য রয়ে গেছে। আর তাই ঐতিহাসিকগণ ফাতেমীয় খলিফার বিতর্কিত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে তাকে ব্যতিক্রম ও পাগলাতে শাসক বলে অভিহিত করেছেন।
উপসংহার : উপরের আলোচনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, আল হাকিম ছিল ফাতেমীয় খিলাফতের এক ব্যতিক্রমধর্মী শাসক।
তিনি তার শাসনব্যবস্থায় যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তা ইসলামের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি প্রজাসাধারণের জন্য যেকোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে কুণ্ঠাবোধ করেননি।