দ্বৈত শাসন কি । দ্বৈত শাসন বলতে কি বুঝায়
দ্বৈত শাসন কি । দ্বৈত শাসন বলতে কি বুঝায় |
দ্বৈত শাসন কি । দ্বৈত শাসন বলতে কি বুঝায়
- অথবা, রবার্ট ক্লাইভের দ্বৈত শাসন বলতে কি বুঝ?
- অথবা, দ্বৈত শাসনব্যবস্থা কি?
- অথবা, দ্বৈত শাসন বলতে কি বোঝ?
উত্তর : ভূমিকা : ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে জয়ের পর মূলত ইংরেজ তথা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার ভাগ্য নিয়ন্ত্রার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।
তবে কোম্পানির উদ্দেশ্য ছিল এদেশীয় কারো হাতে ক্ষমতা রেখে কোম্পানির সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন। এতে তারা সফলও হয়।
তবে এ ব্যবস্থা খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে মীরকাসিমের সম্মিলিত মুসলিম বাহিনীকে পরাজিত করে তারা আরও বেশি শক্তিশালী হয়।
এরপর ১৭৬৫ সালে দিল্লির মুঘল সুলতান শাহ আলমের কাছ থেকে কোম্পানি বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করেন ।
দ্বৈত শাসনব্যবস্থা : দিল্লির সম্রাট শাহ আলমের নিকট হতে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দিওয়ানী লাভ করার পর এখানে একটা বিশেষ শাসনব্যবস্থা কায়েম করে। যেখানে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নবাবকে বেতন ভোগী নবাবে পরিণত করে।
যেখানে নবাবের হাতে শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করা এবং বিচারব্যবস্থা পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয় নবাবের উপর আর প্রতিরক্ষা এবং রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব রাখা হয় কোম্পানির উপর।
এর ফলে এমন এক শাসনব্যবস্থার সূত্রপাত হয় সেখানে নবাব লাভ করে ক্ষমতাবিহীন দায়িত্ব আর কোম্পানি লাভ করে দায়িত্বহীন ক্ষমতা।
এ অদ্ভুত শাসনব্যবস্থা ইতিহাসে দ্বৈত শাসনব্যবস্থা নামে পরিচিত ।এছাড়াও কোম্পানি বাংলার নাবালক নবাব নাজিম-উদ-দৌলার সাথে একটা চুক্তি করেন। বার্ষিক ৫৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কোম্পানি বাংলার দিওয়ানী লাভ করে।
ক্লাইভ রেজা খান ও সিতাব রায়কে নায়েবে নাজিম নিযুক্ত করে বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার রাজস্ব আদায়ের ভার অর্পণ করেন। এছাড়া রেজা খানের উপর ইতোপূর্বে বাংলার নাবালক নবাব নাজিম-উদ- দৌলার দেখাশুনার ভার দেওয়া হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, লর্ড ক্লাইভ মূলত এই দ্বৈত শাসনের প্রবক্তা। এ দ্বৈত শাসন প্রবর্তনের মাধ্যমে কোম্পানি লাভবান হয়। কারণ তারা ইচ্ছামতো প্রজাদের কাছ হতে খাজনা আদায় করতো।
ক্লাইভের দ্বৈত শাসনের প্রভাব ছিল অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। এ শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তাছাড়া শাসনব্যবস্থায় একটা ভারসাম্যহীন অবস্থার তৈরি হয়। যা বাংলার জনগণের জন্য চরম পরিণতি ডেকে আনে।