দার আল হিকমা সম্পর্কে আলোচনা কর
দার আল হিকমা সম্পর্কে আলোচনা কর |
দার আল হিকমা সম্পর্কে আলোচনা কর
- অথবা, দার-আল হিকমা সম্পর্কে লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : ইসলামের ইতিহাসে ফাতেমীয় শাসনামলে যারা শাসক ছিলেন তারা জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তাদের উজিরগণও এ ব্যাপারে পিছিয়ে ছিল না। আর দারুল হিকমা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
[] দারুল হিকমা প্রতিষ্ঠা : ফাতেমীয় খলিফা আল হাকিম ১০০৫ সালে জ্ঞানচর্চার উদ্দেশ্যে দারুল হিকমা নামে এক বিশাল প্রাসাদ নির্মাণ করেন। খলিফা আল হাকিমের এটাই সর্বাধিক কীর্তি।
উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম : শিয়া মতবাদ প্রচার করার উদ্দেশ্যে দারুল হিকমা প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তা আর একই নীতির উপর সীমাবদ্ধ থাকেনি।
ফলে দারুল হিকমা পরবর্তীকালে কবিতা, আইন, ব্যাকরণ, সমালোচনা, জ্যোতির্বিদ্যা, শব্দবিজ্ঞান প্রভৃতি চর্চার প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে ফিকাহ্, কুরআন, হাদিস, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদানের জন্য এখানে অধ্যাপক রাখা হয়েছিল ।
দারুল হিকমার পাশে একটি পুস্তকালয় বা গ্রন্থাগার স্থাপন করা হয়েছিল। যা গ্রন্থাগার নামে পরিচিত ছিল। আর এই গ্রন্থাগারের প্রায় সব বই রাজপ্রাসাদ থেকে প্রেরিত হত।
এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। অনেক দূরবর্তী স্থান থেকে এখানে বহু বিজ্ঞানী ও শিক্ষার্থী সমবেত হত। ফাতেমীয়দের জ্ঞান চর্চার পিছনে দারুল হিকমার অবদান ছিল অনেক বেশি।
দারুল হিকমা বন্ধ ঘোষণা : প্রায় ১১৪ বছর পর্যন্ত জ্ঞান বিতরণ করার পর ধর্মবিরোধী মত প্রচারের অজুহাতে জন্য উজির আফজাল ১১১৯ খ্রিস্টাব্দে এটা বন্ধ করে দেন।
উপসংহার : উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ফাতেমীয়দের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে মিশরে ব্যাপক জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসার ঘটে। আর এ জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে দারুল হিকমা।