চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ভালো দিকগুলো কি কি
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ভালো দিকগুলো কি কি |
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ভালো দিকগুলো কি কি
- অথবা, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ইতিবাচক দিকগুলো লিখ ।
- অথবা, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের চারটি গুণাগুণ উল্লেখ কর।
উত্তর : ভূমিকা : ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যে ক্ষমতা লাভ করে ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে তার চূড়ান্ত সাফল্য পায়। এরপর ১৭৬৫ সালে তারা বাংলার দেওয়ানি লাভ এবং দ্বৈত শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করেন পরে দ্বৈত শাসনের কুফলের ফলে বাংলায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে ব্রিটিশ কোর্ট দ্বৈত শাসন বাতিল করে পঞ্চসালা বন্দোবস্তের প্রবর্তন করেন। পরে ডাইরেক্টর সভার অনুমোদনক্রমে ১৭৯৩ সালের ২২ মার্চ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করা হয় ।
→ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ভালো দিকগুলো : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ভালো দিকগুলো নিম্ন আলোচনা করা হলো :
(ক) নতুন জমিদার শ্রেণির উদ্ভব : চিরস্থায়ী ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে নতুন এক জমিদার শ্রেণির উদ্ভব ঘটে। যারা প্রত্যক্ষভাবে ব্রিটিশ কোম্পানির হয়ে কাজ করত। ফলে তাদের মাধ্যমে কৃষক ও কোম্পানির প্রত্যক্ষ যোগাযোগের ব্যবস্থা হয় ।
(খ) 'রাজস্ব নির্ধারণ : চিরস্থায়ী ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে সরকারের রাজস্ব নির্ধারিত হয়ে যায়। ফলে সরকারের পক্ষে আয়-ব্যয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নে সুবিধা হয় ।
(গ) ব্রিটিশ কোম্পানির ভিত্তি মজবুত : চিরস্থায়ী ব্যবস্থায় জমিদার নির্দিষ্ট রাজস্ব প্রদানের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে জমির মালিকানা লাভ করত তাই তারা তাদের অঞ্চলে সকল প্রকার বিদ্রোহ-বিশৃঙ্খলা কঠোর হস্তে দমন করত।
(ঘ) এলাকার উন্নতি : চিরস্থায়ী ব্যবস্থায় যেহেতু জমিদার চিরস্থায়ীভাবে জমির মালিকানা লাভ করতো তাই তারা অধিক রাজস্ব আদায়ের জন্য রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্টের উন্নতি সাধন করে। ফলে দেশের কৃষি ও শিল্প-বাণিজ্যের উন্নতি সাধিত হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, দোষ ও গুণের সমন্বয়ে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল। কোম্পানির রাজস্ব প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধানের পাশাপাশি প্রজাসাধারণের নিরাপত্তার বিষয়টিও ছিল এই বন্দোবস্ত প্রবর্তনের উদ্দেশ্য।