বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য কী ছিল
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য কী ছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য কী ছিল। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।.
বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য কী ছিল |
বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য কী ছিল
- অথবা, বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য লিখ ।
- অথবা, বক্সারের যুদ্ধ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ নবাব মীর কাসিম ১৭৬০ সালে মীর জাফরের পদচ্যুতির পর ইংরেজদের সাথে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার নীতি গ্রহণ করেন।
কিন্তু দেশ প্রেমিক মীর কাসিমের স্বাধীনচেতা মনোভাব ইংরেজদের মনপূত হয়নি। ফলে তারা মীর কাসিমের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
যার চূড়ান্ত রূপ ঘটে ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধের মাধ্যমে। এ যুদ্ধে মীর কাসিম পরাজিত হয়। কিন্তু এ যুদ্ধের তাৎপর্য রয়েছে বহুল ।
→ বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য : নিম্নে বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য তুলে ধরা হলো :
১. ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার সর্বশেষ সংগ্রাম : অনেক ইতিহাসবিদ বলেছেন, বক্সারের যুদ্ধের ফলাফলের উপর ভারতবর্ষের ভাগ্য নির্ভরশীল ছিল।
পলাশি যুদ্ধ অপেক্ষা বক্সারে যুদ্ধ অধিক তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। কারণ এই যুদ্ধের মাধ্যমেই ইংরেজরা ভারতে তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়।
২. প্রকৃত যুদ্ধ : বক্সারের যুদ্ধ প্রকৃত অর্থেই যুদ্ধ। পলাশির যুদ্ধের মতো যুদ্ধের মহড়া নয়; কারণ এ যুদ্ধে সম্রাট শাহ আলম, নবাব সুজা-উদ-দৌলা এবং মীর কাসিমের সম্মিলিত বাহিনী ইংরেজদের বিরুদ্ধে অভিযান করে।
৩. ব্রিটিশদের সামরিক মর্যাদা বৃদ্ধি : বক্সারের যুদ্ধের ফলে ইংরেজগণ শক্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মুঘল সম্রাট ও বাংলা বিহারে এবং অযোধ্যার দু'নবাবকে পরাজিত করলে তাদের সামরিক মর্যাদা বৃদ্ধি পায় ।
৪. পশ্চিম দিকে আধিপত্য বিস্তার : বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভ শুধু যে ভারতবর্ষেই ইংরেজ প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠা করে তা নয়। পরবর্তীতে তারা Forward policy প্রয়োগ করে পশ্চিম দিকে আফগানিস্তানে আধিপত্য বিস্তারে সক্ষম হয়।
৫. জাতীয় প্রতিরোধ বাহিনী গঠন : বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত হলেও মীর কাসিম তার পূর্বসূরী সিরাজ-উদ-দৌলা অপেক্ষা অধিক কূটনৈতিক প্রজ্ঞার অধিকারী ছিলেন এবং দিল্লির সম্রাট ও অযোধ্যার নবাবের সাথে যোগদান করে একটি জাতীয় প্রতিরোধ বাহিনী গঠন করেন। এর চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এক শতাব্দী পর সিপাহি বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।
৬. অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জন : বক্সারের যুদ্ধে মীর কাসিমকে পরাজিত করে ইংরেজরা পুনরায় পুতুল নবাব মীর জাফরকে বাংলার মসনদে বসিয়ে বাণিজ্যিক তথা অর্থনৈতিক সুযোগ- সুবিধা আরো বাড়িয়ে নেয়।
৭. নবাব ও সম্রাটের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ : এ যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর পরাজয়ের ফলে মুঘল সম্রাট শাহ আলম ও অযোধ্যার নবাব সুজা-উদ-দৌলা ইংরেজদের পেনশনভোগী কর্মচারীতে পরিণত হয়, যা তাদের মানমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৭৬৪ সালে সংঘটিত বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য অনেক। এ যুদ্ধে মীর কাসিম পরাজিত হওয়ায় ইংরেজরা প্রকৃতভাবে এদেশে তাদের আধিপত্য গেড়ে বসে। তবে দেশের প্রতি আন্তরিকতার ব্যাপারে মীর কাসিমের কোন প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য কী ছিল
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য কী ছিল । যদি তোমাদের আজকের বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য কী ছিল পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।