বক্সারের যুদ্ধের ঘটনাবলি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর
বক্সারের যুদ্ধের ঘটনাবলি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর |
বক্সারের যুদ্ধের ঘটনাবলি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর
- অথবা, বক্সারের যুদ্ধের ঘটনাবলি লিখ।
- অথবা, বক্সারের যুদ্ধের ঘটনা কি ছিল?
উত্তর : ভূমিকা : ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাটদের উদাসীনতা, অদূরদর্শিতা এবং সুষ্ঠু বাণিজ্য নীতি না থাকায় ইংরেজরা এ দেশে বাণিজ্য করার অনুমতিসহ রাজনৈতিক সুবিধা লাভ করে।
তারা বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাকে পলাশির প্রান্তরে পরাজিত করে বাংলার কর্তৃত্ব গ্রহণ করে।
এরপর মীর কাসিমের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। এর চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে ১৭৬৪ সালে ঐতিহাসিক বক্সারের যুদ্ধ ।
→ বক্সারের যুদ্ধ : ১৭৬৩ সালে মেজর এ্যাডামসের নেতৃত্বে ১০,০০০ ইউরোপীয় ও ৪০০০ দেশীয় সৈন্য নিয়ে ইংরেজ বাহিনী মীর কাসিমের বিরুদ্ধে অগ্রসর হন।
মীর কাসিমের অধীনে প্রায় ২০,০০০ সৈন্য ছিল। অধিক সংখ্যক সৈন্য থাকা সত্ত্বেও তাদের কোনো সামরিক দক্ষতা ছিল না।
মীর কাসিম কটোয়া, গিরিয়া, উদয়নালা প্রভৃতি যুদ্ধে ইংরেজদের নিকট পরাজিত হন। এরপর মেজর এ্যাডামস মুঙ্গের দিকে অগ্রসর হলে মীর কাসিম 'পাটনায় পলায়ন করে এবং সেখানে সমস্ত বন্দি ইংরেজ সৈন্যকে হত্যা করে।
এরপর মেজর এ্যাডামস সেদিকে অগ্রসর হলে মীর কাসিম নিরুপায় হয়ে অযোধ্যায় পলায়ন করে নবাব সুজা-উদ-দৌলার, আশ্রয় গ্রহণ করেন।
এ সময় মীর কাসিম নবাব সুজা-উদ-দৌলাসহ সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সাহায্য প্রার্থনা করেন। তারা তাকে সাহায্যের আশা দিলে মীর কাসিম যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়।
১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজ সেনাপতি মেজর হেক্টরে সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করল। শাহ আলম ইংরেজদের পক্ষে যোগ দেন এবং সুজা-উদ-দৌলা শর্তসাপেক্ষে স্বীয় সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার করেন।
মীর কাসিম আত্মগোপন করেন। সম্ভবত ১৭৭৭ সালে অতি দরিদ্র অবস্থায় দিল্লির কোনো জীর্ণ কুটিরে তার মৃত্যু হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলার ইতিহাসে বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব অনেক। এ যুদ্ধে মীর কাসিমের পরাজয়ের ফলে ইংরেজরা পূর্ণভাবে বাংলার শাসন ক্ষমতা হাতে নেয় ।
মীর কাসিম যুদ্ধ করে বাংলার স্বাধীনতা রক্ষায় ব্যর্থ হন আর ইংরেজরা জয়লাভ করে তাদের সাম্রাজ্যবাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।